দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিলেন তিনি। এবার দলের সাংসদ তাঁর জেলা থেকে তহবিলের দূরত্ব বাড়িয়ে দিলেন। হ্যাঁ, এটা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরে। যে জায়গাটি শুভেন্দু অধিকারীর ‘গড়’ বলেই পরিচিত। সেখানে তাঁর সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ দিয়েও পরে ফিরিয়ে নিয়েছেন ঘাটালের সাংসদ দেব। এই ঘটনাই এখন রাজ্য–রাজনীতিতে জোর চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, দলীয় নেতৃত্বের পরামর্শেই কি দেবের এই পদক্ষেপ? জল্পনা শাসকদলের অন্দরেও। ঘাটালের সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্নার অবশ্য দাবি, ‘ওখান থেকে বরাদ্দ ফেরানো হয়েছে ঠিকই, তবে ফের ওখানে বরাদ্দ দেওয়া হবে।’ তবে এই কাটছাঁটের কারণ তিনি জানাননি।
জানা গিয়েছে, ঘাটাল লোকসভা নির্বাচনী এলাকার অধীনে সাতটি বিধানসভা নির্বাচনী এলাকা রয়েছে। যার মধ্যে ছ'টি রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। একটি রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে - পাঁশকুড়া পশ্চিম। সাংসদ তহবিলে প্রতি বছরে পাঁচ কোটি টাকা করে বরাদ্দ হয়। প্রথম বছরের বরাদ্দ খরচ হলে তবেই দ্বিতীয় বছরের বরাদ্দ মেলে। শেষ ২০১৯–২০ অর্থবর্ষের বরাদ্দ পেয়েছেন সাংসদরা। করোনাভাইপাস অতিমারীর কারণে সাংসদ কোটার টাকা বরাদ্দ এখন বন্ধ করা হয়েছে। আগামী দু’বছর বরাদ্দ দেওয়া হবে না। সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের (এমপি ল্যাড) নিয়ম হল, বরাদ্দ অর্থ উন্নয়ন খাতে প্রশাসনের হাত দিয়ে খরচ হবে। কোনও কাজে সেই সুপারিশটুকু করবেন সাংসদ।
সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া পশ্চিমেও সবমিলিয়ে ৪৮ লাখ টাকার প্রকল্পের সুপারিশ করেছিলেন দেব। ঠিক ছিল বরাদ্দ অর্থে বসবে একাধিক পথবাতি, একটি ওয়াটার ভেন্ডিং মেশিন। শুরুতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠি লেখেন দেব। ওই পরিমাণ টাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা জানান তিনি। তাই সেই টাকা পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। ফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠি লিখে ওই টাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ফেরত নেওয়ার কথা জানান তিনি। ঘটনাচক্রে দেব যখন এই আবেদন করছেন তখন তৃণমূলের অন্দরে শুভেন্দুকে নিয়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। সাংসদের আবেদন মতো টাকা ফেরতও নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা বলেন, ‘করোনা অতিমারীর সময় পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা এলাকা থেকে ঘাটালের সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে অন্য খাতে খরচের জন্য। সাংসদ ওই বরাদ্দ টাকা শীঘ্রই ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন।’