ইউনেস্কো কলকাতার দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ায় বিদেশিদের বাড়তি আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তিলোত্তমা। দুর্গাপুজোয় এবার বিদেশিদের ঢল নামতে পারে কলকাতায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পর্যটন দফতরের অনুমান প্রায় ১৭ হাজার পর্যটক আসতে পারেন কলকাতায় বলে তথ্য পেয়েছে তারা। এই আবহে হাওড়া–শিয়ালদা স্টেশনে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হল। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, দুর্গাপুজোকে ঘিরে রেল যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই বাড়তি বন্দোবস্ত। একদিকে বিদেশি নাগরিকরা আর একদিকে জেলা থেকে কলকাতায় আসা মানুষজনের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী হচ্ছে? পূর্ব রেল সূত্রে খবর, স্টেশনগুলির পাশাপাশি রেল লাইনের ধারে ঘনবসতিপূর্ণ যে এলাকাগুলিতে দুর্গাপুজো হচ্ছে সেখানেও বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হচ্ছে। রেললাইনের ধারেও দুর্গাপুজোর ক’দিন ২৪ ঘণ্টা প্রহরী মোতায়েন করা হবে। রেল দুর্ঘটনা এড়াতেই এমন পদক্ষেপ। আবার দুর্গাপুজোর সময় রেল স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। তাই স্টেশনগুলির পরিচ্ছন্নতার দিকেও বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া এখন বাইরে থেকে পকেটমার, কেপমারদের ভিড় বাড়ছে। তাতে যেন যাত্রীদের ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
কেন এমন ভাবনা রেলের? কয়েক বছর আগে দশেরার সময় পাঞ্জাবে ট্রেনে কাটা পড়ে ৫৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তাতে কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। এমন ঘটনা যাতে আর কোথাও না ঘটে সেই জন্যই বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে আরপিএফের পূর্ব রেলের আইজি পরমশিব বলেন, ‘রেল লাইনের ধারে থাকা মণ্ডপগুলিতে মাইকের শব্দ বাড়তে থাকে। তার জেরে অনেক সময় ট্রেনের শব্দ শোনা যায় না। তখন রেল দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। পাঞ্জাবের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে রেল লাইন সংলগ্ন মণ্ডপগুলির প্রতি বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: আসছেন না অমিত শাহ, রাজ্য নেতাদের হতাশায় প্রলেপ দিতে বঙ্গ সফরে নড্ডা
আর কী জানা যাচ্ছে? মহালয়া থেকে দীপাবলি পর্যন্ত পাঁচ লক্ষ মানুষ অংশ নিতে পারেন এই উৎসবে। তাই নাশকতা প্রতিরোধ করতে শিয়ালদা–হাওড়া–সহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। ‘অ্যান্টি স্যাবোতাজ’ চেকিং শুরু হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সিসিটিভির নজরদারি। তল্লাশি এবং ভিড়ে মিশে থাকা সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মীরা কাজ করবে। মহিলাদের জন্য সক্রিয় থাকছে আরপিএফের ‘মেরি সহেলি’ বিভাগও। সফররত ট্রেনে অপরিচিত কারও কাছ থেকে পানীয় বা কোনও খাবার না খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন রেল কর্তারা। মাদক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে হামেশাই যাত্রীদের সামগ্রী লুঠপাটের ঘটনা ঘটে থাকে। তাই নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হচ্ছে।