গতকালই সন্দেশখালির পুনরাবৃত্তি দেখা গিয়েছিল ভূপতিনগরে। আর এবার সন্দেশখালির ঘটনাপ্রবাহের ধারাবাহিকতাও বজায় থাকল ভূপতিনগরে। সন্দেশখালিতে যেরকম ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল পুলিশে, ভূপতিনগরেও সেই একই ঘটনা ঘটল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূপতিনগরের ঘটনায় এনআইএ অফিসারদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ধৃত তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই এফআইআর দায়ের করেছে পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ। ধৃত তৃণমূল নেতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য এই বিষয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। (আরও পড়ুন: রাজ্যের শিক্ষদের এবার সুখবর শোনাবে সরকার, তবে এরই মাঝে ভেসে এল শঙ্কার মেঘ)
আরও পড়ুন: ভোটের আবহে কর্মীদের মন জয় করতে চুপিসারে ছক্কা হাঁকাল সরকার, সামনে এল অফিস মেমো
এদিকে ভূপতিনগরের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে তাঁদের দলের নেতাদের গ্রেফতারির ছক কষেছিলেন এনআইএ কর্তা। আজ সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন যে গত ২৬ মার্চ জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার সুপার ধনরাম সিংয়ের নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে যান বিজেপির নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। অভিযোগ, সেই বৈঠকে নাকি বিজেপি নেতা একটি তালিকা তুলে দিয়েছিলেন এনআইএ আধিকারিকের হাতে। কোন কোন এলাকায় কোন কোন তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে, সেটাই নাকি উল্লেখ করা ছিল সেই তালিকায়। সেইসঙ্গে সেদিনের বৈঠকের মধ্যে একটি সাদা প্যাকেটেরও হাতবদল হয়েছে বলে দাবি করেছেন কুণাল। সেই সাদা প্যাকেটের মধ্যে টাকা ছিল কিনা, তা পুলিশের অবিলম্বে তদন্ত করে দেখা উচিত বলে দাবি তুলেছেন তৃণমূল নেতা। (আরও পড়ুন: ঋষি সুনকের দেশের রিপোর্টই হাতিয়ার যোগীর, সরকারের 'উলটো কথা' আদিত্যনাথের মুখে)
আরও পড়ুন: 'প্রথম ১০০ দিনেই...', লোকসভা ভোটে জিতেই 'ঝড়' তোলার ইঙ্গিত মোদীর
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূপতিনগরে গতকাল এনআইএ তদন্তকারীদের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে বিস্ফোরণ কেঁপে উঠেছিল ভূপতিনগর। তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না, তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের বিরুদ্ধে বেআইনি বাজি কারবারের অভিযোগ উঠে এসেছিল তখন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে এনআইএ। সেই তদন্তের সূত্রে ভূপতিনগরে গিয়েই আজ আক্রান্ত হন এনআইএ তদন্তকারীরা। ভূপতিনগরের তদন্তে নেমে এক সপ্তাহ আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের আট জন নেতাকে তলব করেছিল এনআইএ। জানা যায়, নবকুমার পাণ্ডা, মিলন বার, সুবীর মাইতি, অরুণ মাইতি ওরফে উত্তম মাইতি, শিবপ্রসাদ গায়েন, বলাইচরণ মাইতি, অনুব্রত জানা এবং মানবকুমার বড়ুয়াকে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই নোটিশে সাড়া দেননি তৃণমূল নেতারা। এই আবহে এনআইএ তদন্তকারীরা ভূপতিনগরে পৌঁছে যান। সেখান থেকে একজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময়ই নাকি বিক্ষোভের মুখে পড়েন তদন্তকারীরা। এদিকে হামলায় দুই এনআইএ অফিসার আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়। শেষ পর্যন্ত দুই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে এনআইএ। আজ আরও তিন তৃণমূল নেতাকে তলব করা হয়েছে এনআইএ-র তরফ থেকে। আর এরই মাঝে এনআইএ-র বিরুদ্ধে পুলিশে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হল।