দেউচা পাঁচামিকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন বুনছে গোটা বাংলা। বীরভূমের মহম্মদবাজারে মাটির নীচে থরে থরে সাজানো আছে কালো সোনা। আর সেই কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রাথমিক প্রক্রিয়া হল জমি হস্তান্তর করা। প্রস্তাবিত কয়লাখনি গড়ার ক্ষেত্রে যে নোডাল এজেন্সি সেই পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে প্রথম ধাপের জমি হস্তান্তরে বড় পদক্ষেপ নিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। মহম্মদবাজার ভূমি ও ভূমি সংস্কার কার্যালয়ে এই হস্তান্তরপর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার।
সব মিলিয়ে তিনটি মৌজায় ৩৭ একরের মতো জায়গা হস্তান্তর করা হয়েছে। এই জমিতে খনি তৈরির জন্য কার্যালয়, পুনর্বাসন দেওয়ার মতো ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই এই দেউচা পাঁচামি এলাকায় কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে যাতে কোনওভাবেই কোনও জটিলতা তৈরি না হয় সেকারণে সবরকমভাবে সতর্ক হয়ে পা ফেলছে সরকার। কারণ বাম আমলে শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে সমস্য়ায় পড়েছিল সরকার। নন্দীগ্রামের ঝড় কার্যত উড়িয়ে দিয়েছিল বাম সরকারকে। তবে দেউচা পাঁচামির যে জায়গায় কয়লা উত্তোলনের জন্য আগে থেকেই ৪৩০ একর জায়গায় চিহ্নিত করা হয়েছিল। গত নভেম্বর মাসেই এই জায়গা ঠিক করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার উদ্যোগও নেওয়া হবে। এরপর বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে নির্দিষ্ট এজেন্সিকে এখানে কয়লা তোলার ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তবে তার আগে জমি হস্তান্তরের প্রথম ধাপ অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। তবে পিডিসিএল তার আগে এলাকার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করতে চায়।
আসলে কয়লাখনি নিঃসন্দেহে বাংলার শিল্পক্ষেত্রে একটা বড় জোয়ার আনতে পারে। এই কয়লাখনি তৈরির ক্ষেত্রে জমি হস্তান্তর করা নিঃসন্দেহে একটা বড় পদক্ষেপ। তবে প্রাথমিকভাবে জমি হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে কিছু জটিলতা তৈরি হলেও বর্তমানে সেসব আর সেভাবে নেই। এখন কয়লা ব্লককে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন বুনছে বাংলা। আসলে কয়লাখনি মানেই বিপুল কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা। দক্ষ ও অদক্ষ সব ক্ষেত্রেই প্রচুর শ্রমিক কর্মচারীর প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আরও অনেক চাকরির সম্ভাবনাও রয়েছে এখানে। দুটি পর্যায়ে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনহাজার একর জমিতে দেউচা পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লাখনি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এই জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ প্যাকেজও ঘোষণা করেছিল সরকার।
যারা স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছেন তাদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই জমিতেই পুনর্বাসন,পরিকাঠামো উন্নয়ন, খনির জন্য কার্যালয় সব এখানেই তৈরি করা হবে। সেই জমিই হস্তান্তর করা হয়েছে নোডাল এজেন্সিকে।