একসময়ে বিজেপি করতেন। অভিযোগ, পরে নিজেকে সমাজকর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে সালিশি সভা বসিয়ে মোটা টাকাও কামাতেন তিনি। সম্প্রতি কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ডে সকলের সামনেই যুগলের চুল কেটে মারধরও করেন বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত পুলিশ ওই অভিযুক্ত সমাজকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আদালত তাঁকে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে নিজেকে সমাজকর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে দাম্পত্য কলহ মেটাতে সালিশি করে আসছিলেন বাবলি মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা। সেই সব সালিশির ছবি ফেসবুক মারফত ছড়িয়েও দিচ্ছিলেন তিনি। এর আগে ওই মহিলা বিজেপি করতেন। গত মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ অফিস বন্ধ করে যখন বাবলির দু'জন সহযোগী বাড়ি ফিরছিলেন, তখন তাঁরা এক যুগলকে দেখতে পান। তাঁদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা। ঠিক তখনই গাড়িতে করে করিমপুর থেকে হাজির হন ছেলেটির মা ও দুজন আত্মীয়। বাবলির বয়ান অনুযায়ী, মেয়েটি ছেলেটির সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। মেয়েটির বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে বলে জানা গিয়েছে। ফেসবুক মারফত নাকি তাঁদের আলাপ। ছেলেটির বাড়ির লোকেরা তাঁদের নিতে এসেছিল বলে জানা যায়। পুলিশ জানিয়েছেন, ভিন্ন ধর্মের তরুণ ও কিশোরীর মধ্যে প্রেমেই আপত্তি ছিল ওই মহিলার।
প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর ফতোয়া মানতে রাজি ছিলেন না তরুণ ও কিশোরী। তাঁদের অভিযোগ, সেই কারণেই প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী তাঁদের হেনস্থা করেন। প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁদের চুল কেটে দিয়ে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। মারধরের পর যদিও বাড়ি ফিরে যান যুগল। সাহস করে এই বিষয়টি নিয়ে কাউকে কিছুই বলতেও পারেননি তাঁরা। প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নিজেই যুগলকে মারধরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। নিজের এই কীর্তির কথা জাহির করতে গিয়েই বিপাকে পড়েন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী। তাঁর শেয়ার করা ছবি, ভিডিয়ো নজরে পড়ে পুলিশের। এরপরই প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩৫৪, ১৫৩এ, ৫০০, ৫০৫(১), ৫০৯ এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীকে ৭ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।