শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। সেই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া কয়েক হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছে আদালত। তাছাড়া, মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি জেলে রয়েছেন। এছাড়াও একাধিক শিক্ষা আধিকারিক বর্তমানে জেলে রয়েছেন। এর পাশাপাশি সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের গোঠা হাইস্কুলেও বেশ কয়েকজন ভুয়ো শিক্ষকের হাদিস পাওয়া গিয়েছে। এই অবস্থায় কোনও স্কুলে অবৈধভাবে কেউ শিক্ষকতার কাজ করছেন কিনা তা জানতে চাইলেন স্কুল শিক্ষা কমিশনার। এই মর্মে ডিআইদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এরপর ডিআইরা বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন। এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুতির গোঠা স্কুলে মেমো জাল করে নিয়োগ আরও এক ভুয়ো শিক্ষক, অভিযোগ দায়ের
প্রধান শিক্ষকদের বক্তব্য, স্কুলে কেউ অবৈধভাবে শিক্ষকতা করছেন কিনা সেই সংক্রান্ত তথ্য তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন ডিআইরা। কিন্তু, কোনও শিক্ষক ভুয়ো কিনা সেই তথ্য তাদের জানার কথা নয়। কারণ স্কুল সার্ভিস কমিশন তাদের সুপারিশপত্র দিয়েছে এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তাদের নিয়োগপত্র দিয়েছে। ফলে কোনটা ভুয়ো নিয়োগ তা তাদের জানার কথা নয়। তাসত্ত্বেও কেন তাদের কাছে এই তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে? তা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। প্রসঙ্গত, কোনও স্কুলে অবৈধ শিক্ষক রয়েছে কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরেই কমিটি গঠন করে স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই কমিটির মধ্যে রয়েছে স্কুল শিক্ষা কমিশনার, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরেই ডিআইদের এমন নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা কমিশন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠনের বক্তব্য, নবনিযুক্ত শিক্ষকদের সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্র দেখে স্কুলে যোগদান করানো হয়। সেক্ষেত্রে তাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয় কোন শিক্ষক বৈধ বা অবৈধ। আরও একটি সংগঠনের বক্তব্য, আদালতের চাপে পড়ে নিচু তলায় যে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে সেটা হাস্যকর। এই অবৈধ নিয়োগের দায় সম্পূর্ণ সর্বোচ্চ অধিকারিক এবং নেয়া মন্ত্রীদের। ডিআই জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশ রয়েছে। তাই সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।