হাওড়ার শিবপুর হিংসার ঘটনায় আজ, মঙ্গলবার বিহার থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। সুমিত সাউ নামের ওই যুবককে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করল হাওড়া সিটি পুলিশ। শিবপুরের হিংসার দিন ওই যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে অভিযোগ। সুমিত সাউকেই রামনবমীর দিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে দেখা গিয়েছিল বন্দুক হাতে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ভিডিয়ো ট্যুইটও করেছিলেন। এই ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, বাংলার বুকে ধর্মের নামে অশান্তি পাকাতে বিহার থেকে ভাড়াটে গুন্ডাবাহিনী এনে অশান্তি পাকাচ্ছে বিজেপি।
ঠিক কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, সুমিত সাউয়ের সঙ্গে অস্ত্র থাকার বিষয়টি জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে ধৃত যুবক। এই মামলাটি সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া সুমিতও জেরায় স্বীকার করেছে তাকে মোটা টাকা ভাড়া দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল হাওড়ার মিছিল থেকে অশান্তি পাকাতে। আরও জেরা চলছে দফায় দফায়। যাতে কে বা কারা তাকে নিয়ে এসেছিল সেই নামটা জানতে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিজেপির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সংগঠন। সেখানের মিছিলে কেউ থাকা মানে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। ওই মিছিলে এমনি কেউ ঢুকে যেতে পারে না। তাই জেরা করে নাম জানার চেষ্টা চলছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এদিকে শিবপুরের হিংসার ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ তোলা হয়েছিল, অস্ত্র নিয়ে মানুষকে প্ররোচিত করা হয়েছিল। বিজেপির পক্ষ থেকে যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল। অস্ত্র নিয়ে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগের পর থেকেই এলাকা থেকে বেপাত্তা ছিল সুমিত সাউ। হাওড়া সিটি পুলিশ অভিযুক্তের সন্ধান চালাচ্ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে ছবি মিলেছিল। শেষ পর্যন্ত বিহারের মুঙ্গের থেকে সুমিত সাউ নামের ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, হাওড়ার মালিপাঁচঘরা এলাকায় বাড়ি ধৃতের।
নেপথ্য ঘটনা ঠিক কী? অন্যদিকে পুলিশের বিনা অনুমতিতেই হাওড়া শহরে মিছিল বের করা হয়েছিল। সেই মিছিল থেকেই শিবপুর এলাকার কাজীপাড়া থেকে সন্ধ্যাবাজার পর্যন্ত বেছে বেছে সংখ্যালঘু মানুষদের বাড়িতে, দোকানে, গাড়িতে হামলা করা হয়। তার জেরেই শহরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই মিছিলেই সুমিতকে দেখা গিয়েছিল পিস্তল হাতে নাচতে। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ট্যুইট করে বিজেপি–সহ গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার মুঙ্গের জেলা আদালতে তাকে পেশ করতে চলেছে পুলিশ। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে হাওড়ায় নিয়ে আসা হবে। বুধবার তাকে হাওড়ার আদালতে তোলা হতে পারে। বন্দুক সে কোথায় পেল? তাকে ঠিক কত টাকা দেওয়া হয়েছিল? সেই টাকা কে বা কারা দিয়েছিল? এগুলি জানতে চাইছে সিআইডি। তবে এভাবে আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি বলে সূত্রের খবর।