দ্বৈরথে জমে ওঠে বাংলার রবিবাসরীয় রাজনীতি। একদিকে, নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের জনসভায় বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে বিশাল রোড শো–র পর জনসভায় অভিষেককে পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু এদিন বলেন, ‘ওই দলে একজনেরই পোস্ট আর সব ল্যাম্পপোস্ট।’
এদিন ডায়মন্ড হারবারের সভায় অভিষেক বলেছেন, ‘লাইট হাউস ময়দানে বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতির সভায় লোক হয়েছিল মাত্র ৪০০–৪৫০। চা–ওয়ালা, মুড়ি–ওয়ালা, প্রেস–মিডিয়া— সব মিলিয়ে ওই ৫০০।’ সেই কথা তুলে এদিন শুভেন্দু পাল্টা দিয়েছেন, ‘নড্ডাজি নাকি ৫০০ লোক নিয়ে মিটিং করেছেন?’ অভিষেককে তাঁর তোপ, ‘আরে বিজেপি–র শৃঙ্খলাটা ওরা জানে না। বিজেপি–র এখন যা ক্ষমতা আছে, একজন মণ্ডল সভাপতি যদি ডাক দেয় তা হলে ১০ হাজার লোক মিটিংয়ে হাজির হয়ে যাবে।’
গত লোকসভা ভোটে সাড়ে ৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন বলে এদিন দাবি করেছেন অভিষেক। কিন্তু শুভেন্দুর দাবি, ‘১৬০০ বুথের মধ্যে ৩০০ বুথে জিতে বলছে ৩ লাখ ভোটে জিতেছে। কী করে লোকসভা ভোট হয়েছিল সেটা কি লোক জানে না? আর ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় এমন কী ঘটে গেল যে পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা একটা প্রার্থীও দিতে পারেনি। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, এসইউসি, এমনকী নির্দলরাও প্রার্থী দিতে পারেনি।’
তৃণমূল কর্মী–সমর্থকদের ‘জিহাদি’ আখ্যা দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটের সব বিডিও অফিসের সামনে জিহাদিদের বসিয়ে রেখেছিল শাসকদল যাতে কেউ নমিনেশন দিতে না পারে।’ শনিবার হেস্টিংসে সাংসদ সুনীল মণ্ডলের গাড়ির ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার কথা টেনেই এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘হেস্টিংসে কাল আমি যখন ঢুকছি তখন কেউ কিছু বলতে পারেনি। বেরনোর সময় পিছনে সব হইহই করছে। ৫০টা লোক। সব জেহাদি।’
এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে আগামী নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবারে জিতে দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন অভিষেক। সেই চ্যালেঞ্জে একপ্রকার রাজি হয়ে এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘আমি ডায়মন্ড হারবারের সাংগঠনিক জেলা বিজেপি–কে বলব, কাউকে ডাকতে হবে না। শুধু আমাকে ডাকবেন। আমি ডায়মন্ড হারবারে সভা করতে যাব।’ তিনি এদিন আরও বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ আর শুভেন্দু অধিকারী— দু’জন হাত মিলিয়েছি। পদ্মফুল ফুটবেই। মোদীজিকে রাজ্যটা না দিতে পারলে রাজ্যটা বাঁচবে না। কলকাতা আর দিল্লিতে একই দলের সরকার চাই। বেকার যুবকদের চাকরি হবে। শিল্প আসবে, কৃষি বাঁচবে।’ উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুরে শুভেন্দুর সভা রয়েছে ৪ জানুয়ারি। সেদিন তিনি গড়বেতায় সভা করবেন।