উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, মৃত নাবালিকার দেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের। এই আবহে এবার এই ঘটনায় চরম বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পুলিশকে ওভাবে নির্যাতিতার লাশ টেনে নিয়ে যেতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মহলের লোকজন। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা সংলগ্ন পালোইবাড়ি এলাকায় একটি পুকুরের পাশে প্রাণহীন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল নাবালিকার দেহ। মৃত নাবালিকার বয়স ১৭ বছর বলে জানা গিয়েছে। নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে তাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে এবং তারা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যদিও পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষণে কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
এদিকে আজকে এই ঘটনা সম্পর্কিত একটি ভিডিয়ো টুইট করে বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য অভিযোগ করেন, কিশোরীর মৃতদেহ অমানবিক ভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, 'এই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে ধর্ষিত ও খুন হওয়া রাজবংশী সম্প্রদায়ের এক নাবালিকার মৃতদেহ অসংবেদনশীলভাবে টেনে নিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এই ধরনের তাড়াহুড়ো প্রায়ই দেখা যায়। যখন উদ্দেশ্য প্রমাণ মুছে ফেলা হয় বা অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তখন এমনটা দেখা যায়।' মালব্য অপর এক টুইটে অভিযোগ করেন, ‘আশ্চর্যজনকভাবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্র নাথ রায় (রাজবংশী সম্প্রদায়ের) এবং বুধরাই টুডুকে নির্যাতিতার পরিবারের সাথে দেখা করার অনুমতি দেয়নি। কিন্তু উত্তর দিনাজপুর তৃণমূল সভাপতি কানাইয়া লাল আগরওয়ালকে তাঁদের সাথে দেখা করতে দেয়। তারা এখানে কাকে বাঁচাতে চাইছে?’
এদিকে কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ২০ বছর বয়সি অভিযুক্ত যুবককে। পুলিশের জালে সেই যুবকের বাবাও। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার শুক্রবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের কথা জানান। পুলিশ কর্তা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ছিল সেই নাবালিকা। পরে শুক্রবার সকালে তার দেহ উদ্ধার হয়। মৃত কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা এরপর ২০ বছর বয়সি যুবক এবং তার বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্তা। এদিকে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও অভিযোগ করছে যে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে সেই কিশোরীকে। যদিও পুলিশের তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, মৃতদেহের পাশ থেকে বিষ উদ্ধার হয়েছে।