সামনে লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ এসে গিয়েছে বাংলায়। এই আবহে মতুয়া মহাসঙ্ঘের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘অবৈধ’ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ। এভাবেই জমা পড়েছে কোটি টাকা বলে অভিযোগ তুলে তদন্ত চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে চিঠি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। ওই চিঠিতে মমতাবালা লেখেন, আইনত ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’ তাঁর। প্রয়াত বীণাপাণি দেবী স্বাক্ষর করে তাঁকে সেই দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। মতুয়া মহাসঙ্ঘের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের আয়–ব্যয়ের হিসাব প্রত্যেক বছর আয়কর রিটার্ন হিসেবে জমা দেন তিনি। ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘অবৈধ’ লেনদেন হওয়ার জেরে কোটি টাকা জমা পড়েছে। তাই তদন্ত চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে এই চিঠি দিলেন।
এই টাকা জমা পড়ার কথা মমতাবালা ঠাকুর নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চে জানাতে পারেন। তবে আপাতত রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে তদন্তে কি উঠে আসে সেটাও দেখার বিষয়। এই চিঠি পাঠানোর কথা সাংবাদমাধ্যমে স্বীকার করেছেন মমতাবালা। আজ, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন মমতাবালা ঠাকুর। সেখানে গোটা বিষয়টি সামনে নিয়ে আসবেন তিনি। কোথা থেকে এল এত টাকা? জানাবেন মমতাবালা ঠাকুর।
আরও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনার পর আজই নয়াদিল্লি যাচ্ছেন সুকান্ত মজুমদার, দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকায় চমক
এদিকে মতুয়া মহাসঙ্ঘ সূত্রে খবর, ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। হঠাৎ এই টাকা আসায় সবাই চমকে গিয়েছেন। তাই এই টাকার উৎস নিয়েই তদন্ত চান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ। প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা। আর রয়েছেন মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর ও তাঁর দুই পুত্র। মমতাবালা তৃণমূল কংগ্রেসে এবং মঞ্জুলকৃষ্ণের পরিবার বিজেপির সঙ্গে। শান্তনু ঠাকুর আবার বিজেপির সাংসদ তথা রাষ্ট্রমন্ত্রী। এই বিষয়টি নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে যুযুধান দুই পক্ষের রাজনৈতিক লড়াই তুঙ্গে উঠতে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোটের দখল নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। মমতাবালা ঠাকুরের এই চিঠি বোটের লড়াইকে আরও তীব্র করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে মঞ্জুলকৃষ্ণের দুই পুত্র বিজেপির জনপ্রতিনিধি। বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর এখন গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক। ছোট ছেলে শান্তনু বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা প্রতিমন্ত্রী। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে ওই বিপুল পরিমাণ টাকার সঙ্গে মঞ্জুলকৃষ্ণের পরিবারের যোগ রয়েছে। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসকে ফাঁসাতে এমন ছক করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মমতাবালা ডিজির কাছে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি প্রকাশ্যে ওই বিষয়ে অভিযোগ করবেন বলে সূত্রের খবর। তাই সাংবাদিক বৈঠকে কি উঠে আসে সেটাই এখন দেখার।