বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > ৩৫ মিনিট আগে সন্তান প্রসব, মাধ্যমিকে বসলেন মালদার মা, কী মনের জোর!

৩৫ মিনিট আগে সন্তান প্রসব, মাধ্যমিকে বসলেন মালদার মা, কী মনের জোর!

সন্তান প্রসবের ৩৫ মিনিটের মধ্যে মাধ্য়মিকে বসলেন মালদার ছাত্রী। প্রতীকী ছবি

একে পরীক্ষার টেনশন। অন্যদিকে প্রথমবার মা হওয়ার ভয়াবহ উদ্বেগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাবতীয় ব্য়বস্থা নেয়। বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয় গোটা বিষয়টিকে। এরপর বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি।

বেলা ১১টা ২৫ মিনিট। এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন নার্গিস পারভিন। বাড়ি মালদার গাজোলের কয়লাবাদের কুতুবপুর গ্রামে। তবে ভাবছেন এমন তো কতই হয়। না, নার্গিসের ব্য়াপারটি একটু অন্যরকম। তিনি এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সন্তান প্রসব হওয়ার পরেও পরীক্ষা দেওয়ার জেদ থেকে এতটুকু পিছিয়ে আসনেনি তিনি। তিনি জানিয়ে দেন পরীক্ষা দেবেন। এরপর আর দেরি করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাতিমারি গ্রামীণ হাসপাতালেই তাঁর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় থানার আধিকারিকরাও দ্রুত চলে যান হাসপাতালে। কোথাও যাতে কোনওরকম সমস্য়া না হয় সেদিকে সবরকম খেয়াল রাখা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা, নার্গিসের শিক্ষকরাও পরীক্ষা দেওয়ার প্রতি ছাত্রীর এই জেদ দেখে হতবাক। নার্গিসের এই সাহসের কথা এখন লোকের মুখে মুখে ফিরছে। ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটি?

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভোর রাতে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। কম বয়সে বিয়ে হয়েছিল ওই ছাত্রীর। তার মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছিল সুলতানগঞ্জ হাইস্কুলে। সকাল ৬টা নাগাদ প্রসব ব্যাথা শুরু হয় ওই পরীক্ষার্থীর। দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন বাড়ির লোকজন। তাকে হাতিমারি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু যেদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সেদিনই তার মাধ্যমিক পরীক্ষা। 

একে পরীক্ষার টেনশন। অন্যদিকে প্রথমবার মা হওয়ার ভয়াবহ উদ্বেগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাবতীয় ব্য়বস্থা নেয়। বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয় গোটা বিষয়টিকে। এরপর বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে তিনি কি পরীক্ষা দিতে পারবেন? এরপর ঠিক ৩৫ মিনিটের মাথায় তিনি বসেন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে। এতটাই মনের জোর। সারাবছর পড়াশোনা করেছেন তিনি। সেকারণে একটি পরীক্ষা মিস হয়ে যাক এটা চাননি তিনি। পরে পরীক্ষা দিয়ে, কখনও আবার পরীক্ষার মাঝে তিনি সন্তানের খেয়াল রেখেছেন। তবে ওই পরীক্ষার্থীর মনের জোর দেখে, তার জেদের কথা জেনে হতবাক চিকিৎসক ও শিক্ষক, শিক্ষিকারা। তাঁরা সবসময় ওই মাধ্য়মিক পরীক্ষার্থীর পাশে রয়েছেন। 

বন্ধ করুন