বীরভূমের দলীয় প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সাঁইথিয়ার মেলার মাঠে এই জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। শতাব্দীর সমর্থনে আগেও বীরভূমে প্রচারসভা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখান থেকেই রাজ্যের যুবক–যুবতীদের জন্য কর্মসংস্থানের বড় সুযোগের কথা জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দেউচা পাঁচামিতে ১০ লাখ কর্মসংস্থান হতে পারে বলে জানালেন তৃণমূল নেত্রী। লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে এই কর্মসংস্থানের খবর বলা যেতে পারে তাৎপর্যপূর্ণ।
একদিকে যখন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি বাতিল নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা তখন মুখ্যমন্ত্রীর এই বিপুল কর্মসংস্থানের খবর নিঃসন্দেহে মাস্টার স্ট্রোক। নির্বাচনী প্রচার করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে এত উন্নতি হয়েছে, এবং আগামী দিনেও দেউচা পাঁচামিতে যেই ১ লাখ ছেলেমেয়ের নতুন করে চাকরি হবে, কোনও ঘরে আর বেকার থাকবে না। এখানে এতটাই কাজ হচ্ছে। মনে রাখবেন দেউচা পাঁচামি আপনাদের গর্ব।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই খবর দিচ্ছেন তখন সুপ্রিম কোর্ট ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি পিছিয়ে দিল। আজ, মঙ্গলবার সম্ভবত এই শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে কড়া সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন, থাকতে পারবেন না নেতা–মন্ত্রীরা
একাধিক নির্বাচনী প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের হাতে ১০ লক্ষ চাকরি প্রস্তুত আছে বলে বারবার সওয়াল করেছেন। কিন্তু সেটার বিস্তারিত কিছু জানাননি। এবার সেটাই কার্যত উঠে এল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তাঁর বক্তব্য, ‘বীরভূম, বর্ধমান আমাদের শস্যভাণ্ডার। আপনারা আমাদের শস্য দেন, তাই দিয়ে আমরা জীবনধারণ করি। আগামী দিনে দেউচা পাঁচামিতে এক লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। কোনও ঘরে বেকার থাকবে না। এটা আপনাদের গর্ব। বিনা পয়সা শস্য়বিমা আমরা দিই। কেন্দ্রীয় সরকার দেয় না। সারা দেশকে লুট করেছে মোদী সরকার। আমি বললে দোষ হবে। যখন অর্থমন্ত্রীর স্বামী দাঁড়িয়ে বলেন, দেশ লুট হয়ে গেল, দেশে আর কোনও দিন ভোট হবে না যদি মোদী আবার আসে। তখন সবাই চুপ। নোটবন্দির সময় জনগণের টাকা লুট করেছে।’
এছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকদেরও বাংলায় ফিরে আসার এবং কাজ করার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার দেউচা পাঁচামিতে ১ লাখ কর্মসংস্থান হতে পারে বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। অনেকদিন ধরেই আলোচনার মধ্যে দিয়ে কাজ চলছে দেউচা পাঁচামিতে। সেখানেই কর্মসংস্থানের কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘মোদীরা যা বলেছিল, কিচ্ছু করেনি। দু’কোটি ছেলেমেয়েকে চাকরি দেবে বলেছিল। কিন্তু চাকরি তো দেয়নি। উলটে বেকারের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। তার উপর আমাদের ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি ওরা কোর্টে কেস করে খেয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমরা শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশে আছি। আমি সেই কথাই বলি, যা আমি রাখতে পারব। যে কথা রাখতে পারব না সেটা আমার মুখ দিয়ে বলানো যাবে না। আমাকে দেখতে হয় আমার কাছে টাকা আছে কি না। কারণ দিল্লি সব টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের ১ কোটি ৭৪ লক্ষ বকেয়া।’