পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ৪,৫০০ কোটি টাকার ইস্পাত কারখানার উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা পুরুলিয়ার ভোল পালটে দেবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট মহল। ওই মহলের বক্তব্য, যখন পুরোদমে ওই ইস্পাত কারখানা চালু হয়ে যাবে, তখন ৮,০০০ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ২,৫০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই পুরুলিয়ার বাসিন্দা বলে দাবি করা হয়েছে। সেই তালিকায় আছেন জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যরাও। তবে শুধু রঘুনাথপুরে নয়, মঙ্গলবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে যে তিনদিনের জঙ্গলমহল (পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম) সফর শুরু হচ্ছে, তাতে একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্পের সূচনা করবেন। একাধিক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ইস্পাত কারখানা
মুখ্যমন্ত্রী শ্যাম স্টিলের যে ইস্পাত কারখানার উদ্বোধন করবেন, তা রঘুনাথপুরের জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরীতে (রঘুনাথপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক) গড়ে উঠেছে। ৬০০ একর জমিতে সেই কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে। সেজন্য ১,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে শ্যাম স্টিল। ওই কারখানা যখন পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে, তখন বছরে ১১.৯ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করতে পারবে।
মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফর
আজ পুরুলিয়ায় সরকারি কর্মসূচি আছে মুখ্যমন্ত্রীর। সেখানে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন একাধিক প্রকল্পের। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন। তারপর বিকেলের দিকে বাঁকুড়ায় পৌঁছাবেন। রাতে বাঁকুড়ায় থাকবেন। তারপর বুধবার খাতরায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে পারবেন। সেখানেও একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন মমতা।
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার হয়ে ঝাড়গ্রামে পৌঁছাবেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে সরকারি পরিষেবা প্রদানকারী অনুষ্ঠান যোগ দেবেন। তারপর মার্চের গোড়ার দিকে পশ্চিম মেদিনীপুরেও যেতে পারেন মমতা। সূত্রের খবর, সেখানেও নিজের সরকারের জনমোহিনী প্রকল্পের উপর জোর দেবেন। একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। অলিচিকি হরফের জন্য শিক্ষক নিয়োগের মতো ঘোষণাও করতে পারেন মমতা।
আরও পড়ুন: ‘শিল্প–সেতু’ গড়ে উঠতে চলেছে বর্ধমান–আরামবাগ রোডের উপর, পাল্টাবে পরিস্থিতি
এমনিতে লোকসভা ভোটের আগে মমতার জঙ্গলমহল সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২০১৯ সালে জঙ্গলমহলে জোরদার ধাক্কা খেয়েছিল মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখান থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও জঙ্গলমহল নিয়ে কিছু একটা স্বস্তিতে নেই ঘাসফুল শিবির। সেই পরিস্থিতিতে উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখিয়ে মমতা জঙ্গলমহলের মানুষের আস্থা মজবুত করতে চাইছেন বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।