একের পর এক দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের নেতামন্ত্রী, বিধায়করা। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর বুধবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পদ্ম শিবিরের দিকে পা বাড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এমন সময় প্রকাশ্যে সভায় দল ছাড়ার বার্তা দিলেন তৃণমূলের আর এক বিক্ষুব্ধ নেতা তথা আসানসোলের পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাই দেরি না করে বুধবার দুপুরে সরাসরি জিতেন্দ্রকে ফোন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে, এদিন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ফোন করে মমতা জানিয়েছেন, এই পুরো বিষয়টি তিনি নিজে দেখছেন। সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন দলনেত্রী। ১৮ ডিসেম্বর, শুক্রবার জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। তার আগে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ছাড়া কলকাতার অন্য কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে জিতেন্দ্রকে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে মমতা এদিন বিক্ষুব্ধ জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
কিন্তু এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এত সব নির্দেশ, পরামর্শের পরও এদিন রাতে কাঁকসায় বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে হাজির হন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। উদ্দেশ্য, সদ্য বিধয়ক পদ ত্যাগ করা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলা। যদিও এদিন বৈঠক শেষে আসানসোলের পুর প্রশাসন জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আছি। তৃণমূলে দিদি ছাড়া অন্য কাউকে নেতা মানব না।’
সূত্রের খবর, সুনীল মণ্ডলের বাড়ির বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী এদিন জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে বলেছেন, ‘আমি বিজেপি–তে যাচ্ছি। তোমরাও বিজেপি–তে এসো। একসঙ্গে মিলে কাজ করব।’ জানা গিয়েছে, এর প্রত্যুত্তরে জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে যেহেতু দলনেত্রী তাঁকে ফোন করেছিলেন এবং তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তাই এখন তাঁর বা তাঁর অনুগামীদের বিজেপি–তে যাওয়া সম্ভব নয়। একইসঙ্গে জিতেন্দ্র সাফ জানিয়েছেন যে তিনি দলনেত্রীর সঙ্গেই থাকতে চান।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, মুখ্যমন্ত্রী যদি আজ জিতেন্দ্রকে ফোন না করতেন তবে হয়তো তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান শুভেন্দুর দিকেই হেলে যেত। কারণ, এদিনই জিতেন্দ্র তিওয়ারি শাসকদলের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রকাশ্য সভায় বলেছেন, ‘আর কতদিন এভাবে ভয়ে ভয়ে থাকব। এক না এক সময় তো সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দল বললে চলে যাব। কিন্তু মানুষের সঙ্গেই থাকব।’