কখনও সাপ, কখনও টিকটিকি, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খাবার নিয়ে রাজ্যে অভিযোগের শেষ নেই। তবু খাবারটুকু পাচ্ছিল শিশু ও প্রসূতিরা। এবার বন্ধ হয়ে গেল তা-ও। বাঁকুড়ার ওন্দায় ৩৬০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শুক্রবার চড়ল না হাঁড়ি। কেন্দ্রের কর্মীদের দাবি, ৩ মাস ধরে সবজি ও ডিমের দাম মেটায় না প্রশাসন। তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরবরাহ।
শুক্রবার সকালে ওন্দা ব্লকের শিশু ও প্রসূতিরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন রান্না হয়নি। রান্নার দায়িত্বে থাকা মহিলারা জানান, সবজি - ডিম বাড়ন্ত। তাই রান্না না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার দায়িত্বে থাকা এক মহিলা জানান, তিন মাস ধরে ডিম ও সবজির দাম বাকি। যাঁরা এসব সরবরাহ করেন তাঁরা জানিয়েছেন এভাবে আর পারবেন না। টাকা মেটালে তবেই আবার জিনিসপত্র পাওয়া যাবে। তাই আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি বিডিও ও পদস্থ আধিকারিকদের জানিয়েছি। তাঁরা যা করার করবেন।
শিশুকে নিয়ে অঙ্গনওয়াড়িতে আসা এক অভিভাবক বলেন, রোজ এখান থেকে খাবার নিয়ে যাই। আজ শুনলাম রান্না হয়নি। কী আর করব। তাই ছেলেকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। শুনলাম বাজারে না কি টাকা ধার রয়েছে। তাই জিনিসপত্র দিচ্ছে না। সরকারি টাকা কী করে বাকি থাকে জানিনে বাপু।
ওদিকে রান্না যে বন্ধ তা জানেনই না মহকুমাশাসক সুশান্ত কুমার ভক্ত। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছেই শুনলাম রান্না বন্ধ। কেন রান্না বন্ধ খতিয়ে দেখতে হবে। সাপ্লাই চেইনে মাঝে মাঝে সমস্যা হচ্ছে। এব্যাপারে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।’
এই ঘটনায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেন, মা ও শিশুদের পুষ্টিকর আহারের জন্য অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা পাঠায়। আর সেই টাকা দিয়ে সরকার ট্রেন দুর্ঘটনা, বোমা বিস্ফোরণ, গণহত্যায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়। এভাবে এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ করলে টান তো পড়বেই। শিশুদের মুখের গ্রাস কেড়ে রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’।