শারীরিক অসুস্থতার জেরে মৃত্যু হয়েছিল ছেলের। তারপরেই ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন মা। সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে ছেলের মৃত্যুর ৫ ঘণ্টা পর মৃত্যু হল মায়ের। এমন ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর ১ নম্বর ব্লকের গোলারহাট এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। এরকম যে হবে তা কল্পনাও করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। মৃত ছেলের নাম হল তাপস দত্ত (৫৫) এবং মায়ের নাম সন্ধ্যারানী দত্ত (৭৩)।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে নিখোঁজ, সোম সকালে ইডেন থেকে উদ্ধার CAB কর্মীর ছেলের দেহ, আত্মহত্যা?
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের জাহান্নগর পঞ্চায়েতের গোলারহাটের বাসিন্দা। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি যক্ষ্মা রোগে ভুগছিলেন। এর জন্য তিনি চিকিৎসাও করছিলেন। দীর্ঘ চিকিৎসায় তিনি সেরে উঠেছিলেন। কিন্তু যক্ষ্মা রোগ সেরে গেলেও তিনি অ্যাজমা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর জন্য তার চিকিৎসা চলছিল। প্রায়ই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল তাপস বাবুর। কিন্তু শীত বেড়ে যাওয়ায় তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই অবস্থাতেই শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, তাপসবাবু ছিলেন মায়ের বড় ছেলে। এদিকে তাপস বাবুর মা সন্ধ্যারানীও বয়স্ক জনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন। প্রথমে তাকে বড় ছেলের মৃত্যুর খবর পরিবারের কোনই সদস্য জানাননি। তবে কোনওভাবে তিনি জানতে পারেন বড় ছেলে মারা গিয়েছেন। এরপরে তিনি শোকে কাতর হয়ে পড়েন। পরে শনিবার বিকেলেই তার মৃত্যু হয়। একই পরিবারে একই দিনে দুজনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নামে এলাকায়।
মৃতদের পরিবারের এক সদস্য জানান, তাপস বাবু গত ২ বছর ধরে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। নিয়মিত চিকিৎসার পর তিনি সেরে উঠেছিলেন। কিন্তু, অ্যাজমা রোগ থাকার কারণে তিনি শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতেন। শীতকালে ঠান্ডা বেশি হওয়ায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তা থেকে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় তাপস বাবুর। পরে বৃদ্ধা মা সন্ধ্যারানী দত্ত ছেলের মৃত্যুর খবর জানার পর নিজেকে সামলাতে পারেননি। তিনিও অসুস্থ ছিলেন। তাপস বাবুর ভাই সঞ্জীব দত্ত জানান, তার মা তার দাদাকে খুবই ভালোবাসতেন। ফলে বড় ছেলের মৃত্যুর শোক সামলাতে না পারার কারণে মায়েরও মৃত্যু হয়েছে।