‘সবুজ সংকেত’ এসে গিয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। আর শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই বহুপ্রতীক্ষিত নশিপুর রেলসেতুর উদ্বোধন করতে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার সকালে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে নবনির্মিত আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ লাইনের উদ্বোধন করবেন মোদী। যে লাইনের মধ্যেই পড়ছে নশিপুর রেলসেতু। আর ওই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হলে হাওড়া এবং শিয়ালদা থেকে উত্তরবঙ্গে যেতে আরও কম সময় লাগবে। এখন যা সময় লাগে, তার থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা কমেই কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে পৌঁছানো যাবে। সেইসঙ্গে উত্তর ভারতের (দিল্লির মতো) সঙ্গে রেল যোগাযোগ আরও ভালো হয়ে উঠবে। মুর্শিদাবাদের মানুষ সহজেই দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন। তাঁদের ঘুরে-ঘুরে যেতে হবে না। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, নশিপুর সেতুর হাত ধরে মুর্শিদাবাদের আর্থিক উন্নতির পথ প্রশস্ত হবে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে লাখ-লাখ মানুষের জীবনের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আর সেই সুফল পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে মুর্শিদাবাদের মানুষকে। তাই যত কাজ এগোচ্ছিল, তত উত্তেজনা বাড়ছিল তাঁদের। শেষপর্যন্ত বৃহস্পতিবার নশিপুর রেলসেতু পরিদর্শনে আসেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (ইস্টার্ন সার্কেল) শুভময় মিত্র। সার্বিকভাবে নবনির্মিত আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ লাইনের পরিদর্শনের পাশাপাশি রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে নশিপুর সেতুর খুঁটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখেন। নবনির্মিত লাইনে কেমন কাজ হয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা,তা ভালোভাবে দেখে নেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (ইস্টার্ন সার্কেল)।
তারপর আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ লাইনে ট্রায়াল রানও হয়। ১৪ কোচের প্যাসেঞ্জার ট্রেন নিয়ে সেই ট্রায়াল চালায় রেল। নশিপুর সেতুও দিয়ে ছুটে যায় সেই ট্রেন। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ট্রায়াল রানের সময় ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিবেগ ছুঁয়ে ফেলা হয়। যাত্রীবাহী ট্রেনের ভার সামলাতে কতটা সক্ষম নশিপুর সেতু, ঝাঁকুনি সামলাতে কতটা সক্ষম, তা পরীক্ষা করে দেখেন রেলের কর্তারা। তারপর কয়েকটি পর্যবেক্ষণ যোগ করে নশিপুর রেলসেতুতে যাত্রী পরিবহণ শুরু করার ছাড়পত্র দেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (ইস্টার্ন সার্কেল)।
তারইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে শনিবার সকালে নশিপুর সেতু গিয়ে ট্রেন চালানোর জন্য সবুজ পতাকা দেখাবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন করবেন আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ লাইনের। যে লাইন 'রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, পণ্য পরিবহণ এবং অর্থনৈতিক ও শিল্পের উন্নতির ক্ষেত্রে সেই লাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে' বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।