পেট্রল–ডিজেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। রান্নার গ্যাস কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তের। তৃণমূল কংগ্রেস রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে। এই চিত্র সবাই দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বাংলায় ঘটতে চলেছে নতুন বিপ্লব। সেটা কোনও বড় আন্দোলন করে নয়। বরং বিকল্প পথে বাংলার মানুষের উপর থেকে আর্থিক বোঝা কমিয়ে। যখন গোটা দেশ ভাবছে এই বিপুল দাম বৃদ্ধি থেকে মুক্তি মিলবে কি করে, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ঘটতে চলেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
কেমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে? বাংলার একটি বেসরকারি সংস্থা তৈরি করছে বায়ো–সিএনজি গ্যাস। যা একদিকে মধ্যবিত্তের আর্থিক চাপ কমাবে এবং অন্যদিকে রাজ্যের বাতাসকে দূষণমুক্ত রাখবে। আর এই কাজ করছেন বঙ্গসন্তানরা। শুধু তাই নয়, বিপুল কর্মসংস্থানের পাশাপাশি উপকৃত হবেন কৃ্যকরা। এই গোটা বিষয়টি আগামী বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ঘোষণা করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বলে খবর।
কে বা কারা প্রকল্পটি করছে? নবান্ন সূত্রে খবর, একটি বাঙালি বেসরকারি সংস্থা গোটা প্রকল্পটি গড়ে তুলছে। এই সংস্থার কর্ণধার রঞ্জুগোপাল বর্মণ এবং অংশীদার দেবাশিস বসু। আর যিনি বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন তিনি হলেন আইআইটি–বিএইচইউ’র অধ্যাপক ডঃ প্রীতম সিং। তিনিও বাংলার মানুষ। এই প্রকল্পটি গড়ে তোলা হচ্ছে সিঙ্গুর এবং ডানকুনিতে। সুতরাং আবার টার্নিং পয়েন্ট সিঙ্গুর। ইতিমধ্যেই রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে সিএনজি গাড়ি কিনলে কর এবং রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে দু’বছরের জন্য অর্থ মুকুব করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
কিভাবে এবং কোথায় হচ্ছে প্রকল্পটি? এই বিষয়ে বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার রঞ্জুগোপাল বর্মণ সরাসরি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটালকে বলেন, ‘এই গ্যাস আমরা তৈরি করছি ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে। সেখানে কৃষিজাত পণ্য, কাঠ, গরুর গোবর, কচুরিপানা–সহ আরও বেশকিছু ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়েই এই গ্যাসটি তৈরি হচ্ছে। পেট্রল পাম্পের মতোই এই গ্যাসের পাম্প গড়ে তোলা হচ্ছে। যা হতে চলেছে ডানকুনি–সিঙ্গুর, কলকাতা–শিলিগুড়ি, কলকাতা–আসানসোল এবং কলকাতা–দিঘা রুটে। কারখানাটি হবে সিঙ্গুরে।’
এই গ্যাসে কী কী চলবে? জানা গিয়েছে, এই গ্যাসের মাধ্যমে চলতে পারবে—বাস, অটো, ট্যাক্সি, গাড়ি এবং পণ্যবাহী ট্রাক। এমনকী বেঙ্গল গ্যাসের মাধ্যমে গৃহস্থের হেঁসেলে পৌঁছে যাবে রান্নার গ্যাস। তাও বর্তমান দামের তুলনায় অর্ধেক দামে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার কথা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। এই গ্যাসের এক একটি প্লান্টে ৪০ জন করে চাকরি পাবে। সেখানে এতগুলি পাম্প হচ্ছে। সুতরাং বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে। এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দেখার জন্য। এখানে কৃষকরা তাঁদের ফেলে দেওয়া জিনিস বিক্রি করে পর্যন্ত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যা আগে জ্বালিয়ে দিতেন তাঁরা। এই উদ্যোগ যে মুহূর্তে বাস্তবায়িত হবে সেই মুহূর্তে বাংলায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।