সরকারি হাসপাতালে ফের চরম অমানবিক ছবি ধরা পরল। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রসব করার সময় মিলল না কোনও চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী। শেষে হাসপাতালের মধ্যে নিজেই সন্তান প্রসব করলেন প্রসূতি। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না সদ্যোজাতকে। মুখের মধ্যে মল প্রবেশ করে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হল সদ্যোজাতের। এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল। এই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে চরম অবস্থায় অভিযোগ তুলেছেন সদ্যোজাতের পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: টাকার অভাবে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে পারলেন না দিন মজুর বাবা, মৃত্যু হল ছেলের
জানা গিয়েছে, প্রসূতির নাম নুরিনা পারভিন। তিনি ধুপগুড়ির বাসিন্দা। প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় মঙ্গলবার তাঁকে ধুপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর বৃহস্পতিবার প্রসূতির প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। অভিযোগ সেই সময় অনেক ডাকাডাকি করেও চিকিৎসক নার্সদের কোনও সাড়া মেলেনি। শেষে থাকতে না পেরে প্রসূতি নিজেই প্রসব করেন। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। এদিকে এক নার্স সেখানে এসে পৌঁছন। কিন্তু, তার আগেই প্রসূতির সন্তান প্রসব হয়ে যায় বলে অভিযোগ। কিন্তু, দুর্ঘটনাক্রমে প্রসবের সময় কোনওভাবে সদ্যোজাতের মুখে মল চলে গিয়েছিল। যে কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সদ্যোজাতের। এ নিয়ে নার্স প্রসূতি এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ।
এদিকে, সদ্যোজাতকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু, সেখানে চিকিৎসকরা না পেরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করেন। শেষ পর্যন্ত সেখানেই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উপড়ে দিয়েছেন প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা। এই অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন ধুপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। তিনি জানান, মল আটকে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হয়েছিল সদ্যোজাতের।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ধুপগুড়ির বিএমওএইচ অঙ্কুর দাস। তিনি জানান, ঘটনার সময় নার্স ছিলেন। তাছাড়া প্রসূতি যে একাই প্রসব করেছিলেন তা ঠিক নয়। সদ্যোজাতের মাথা বেরিয়ে এসেছিল তারপরে নার্স দিয়ে ডেলিভারি করান। সদ্যোজাতের মুখে মল চলে যাওয়ার ফলে সমস্যা হয়েছিল। উল্লেখ্য, সরকারি হাসপাতালে এই প্রথম নয়, প্রায়ই অমানবিক ছবি ধরা পড়ে সরকারি হাসপাতালে। তারা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অনেক রয়েছে।