কখনও খাবারে বিষ মিশিয়ে আবার কখনও নৃশংসভাবে পথ কুকুরকে মেরে ফেলার ঘটনা সামনে আসছে রাজ্যে। ঠিক সেই সময় পথ কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিলেন পুলিশের ওসি। ঘটনাটি জলপাইগুড়ির। আজ সকালে বাইকে করে পুলিশ লাইনে যাচ্ছিলেন ওই অফিসার। সেই সময় তাঁর সামনে চলে আসে একটি পথ কুকুর। তখন কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা ডিভাইডারে ধাক্কা মারে ওসির বাইক। ঘটনায় মৃত্যু হয় ওই পুলিশ অফিসারের। মৃত ওসির নাম করুণকান্ত রায়।
আরও পড়ুন: মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে গ্যাঁজলা, বীরভূমে পরপর ২ দিনে মৃত্যু ১৬ কুকুরের, বিষ দিয়ে খুন?
জানা গিয়েছে, তিনি জলপাইগুড়ির মনিটরিং সেলের ওসি। মাস্টার প্যারেডে যোগ দিতে পুলিশ লাইনে যাচ্ছিলেন। এদিকে, গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে। সকালের দিকে ঘন কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা খুব দুর্বল থাকছে। এদিন সকালে ওসি যখন পুলিশ লাইনে যাচ্ছিলেন তখন ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল রাস্তা। ঠিক সেই সময় তাঁর সামনে চলে আসে পথ কুকুরটি। তখন বাইক পাশ কাটাতে গিয়ে তিনি ডিভাইডারে ধাক্কা মারেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সহকর্মীর মৃত্যুতে পুলিশ মহলে শোকের ছায়া নামে। জানা যায়, ওই ওসিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি পরিবারকেও খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। তবে চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, ঘন কুয়াশার কারণে সমস্ত ধরনের পরিবহণ পরিষেবা কার্যত ব্যহত হচ্ছে। ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে ব্যহত হচ্ছে বিমান পরিষেবা। গত দুদিনে একাধিক উড়ান বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বহু ট্রেন দেরিতে ছাড়ে। কিছু জায়গায় দৃশমানতা ১০০ মিটার আবার কিছু জায়গায় দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারেরও কম। সকালের দিকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে একাধিক এলাকা। এই অবস্থায় পথ দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরগতিতে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা। আর সেই জায়গায় একজন ওসির পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল। উল্লেখ্য, বীরভূমে গত কয়েক দিনে দুটি এলাকায় ১৬ টি পথকুকুরকে মেরে ফেলার অভিযোগ সামনে এসেছে। সে ক্ষেত্রে খাবারের বিষ মিশিয়ে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনার তদন্ত করছে প্রশাসন। আর এবার উলটো ঘটনা দেখা গেল জলপাইগুড়িতে।