ফের ভিন বাঙালি পড়ুয়ার মৃত্যু। ওড়িশার ভুবনেশ্বরে এক বাঙালি ডাক্তারি ছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কলেজের হস্টেলের ঘর থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃত ছাত্রীর নাম মৌবানি দাস (২৩)। জানা গিয়েছে, ভুবেনশ্বরে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডেন্টাল সার্জারির দ্বিতীয় বিভাগের ছাত্রী ছিলেন মৌবানি। কলেজে নবাগতদের জন্য একটি অনুষ্ঠানের কিছুক্ষণ আগেই হস্টেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন: এবার ডাক্তারি পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু খাস কলকাতায়, আরজি কর হাসপাতালে রহস্য
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী হুগলি জেলার হরিপাল থানার অন্তর্গত মোহনবাটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছিলেন। যদিও কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সেই বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য পায়নি পুলিশ। তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ভুবনেশ্বরের ডেপুটি কমিশনার প্রতীক সিং জানান, এটি নিশ্চিতভাবে একটি আত্মহত্যার ঘটনা। তাঁর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল এবং জানালা বন্ধ ছিল। ব্যক্তিগত কারণেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার প্রতীক সিং।
পুলিশ জানিয়েছে, মৌবানি আরও দুই রুমমেটের সঙ্গে ওই ঘরে থাকতেন। ঘটনার দিন কলেজে নবাগতদের জন্য অনুষ্ঠান পরিচালনা করা এবং স্বাগত জানানোর দায়িত্ব ছিল মৌবানির। তাঁর রুমমেটরা অনুষ্ঠানের জন্য চলে গেলে তিনি ঘরে একাই ছিলেন। মৌবানি তাঁর রুমমেটদের বলেছিলেন যে তিনি কিছুক্ষণের মধ্যে অনুষ্ঠানে পৌঁছে যাবেন। কিন্তু, তিনি অনুষ্ঠানে পৌঁছননি।
এদিকে, অনুষ্ঠানে না পৌঁছনোয় মৌবানিকে খুঁজতে আসেন তাঁর রুমমেটরা। তখন তাঁরা ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকতে দেখেন। অনেক ডাকাডাকি করেও ছাত্রীর কোনও সাড়া পাননি তাঁরা। তাঁর মোবাইল নম্বরেও তাঁরা ফোন করেন। কোনও উত্তর না পাওয়ায় তাঁরা হস্টেল কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে কর্তৃপক্ষ থাকায় ফোন করে বিষয়টি জানায়। রাতেই হস্টেলে পৌঁছে পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে তাঁকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার খবর দেওয়া হয় মৌবানির পরিবারকে। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ভুবনেশ্বরে পৌঁছন মৌবানির পরিবারের সদস্যরা। যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অন্যদিকে, কলেজে পড়াশোনা নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা ছিল না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ । কী কারণে তিনি এই চরম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা ভেবে পাচ্ছেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।