রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা - মন্ত্রীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে ইডি - সিবিআই – আয়কর। কেন্দ্রীয় সংস্থার এই তৎপরতাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছে তৃণমূল। এবার তৃণমূলের সেই অভিযোগ কার্যত মেনে নিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। বললেন, বিজেপির ওপর হামলা হলে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে সিবিআই হানা দেবে।
শনিবার বহরমপুরের টিয়ায় এক দলীয় সভায় রাহুলবাবু বলেন, ‘আমি তৃণমূল নেতাদের বলে যেতে চাই, 'বিজেপির ওপর হামলা হলে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে সিবিআই হানা হবে। এটা আমি পরিষ্কার করে বলে যাচ্ছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি কর্মীদের মেরে ঘরে ঢুকিয়ে রেখে ক্ষমতা দখলে রাখতে চাইছেন। যে তৃণমূল নেতারা ২ তারিখের (২ মে ২০২১) পর বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছিল তারা আজ বাড়িতে থাকতে পারে না। সিবিআইয়ের ধাক্কায় আজ তারা বাড়ি ছাড়া হয়ে গিয়েছে।’
বিজেপি নেতার এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাহুলবাবুকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে যা বলে আসছি উনি আজ তা স্বীকার করে নিলেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি হানা দিচ্ছে। কিন্তু এভাবে বিজেপি তৃণমূলকে রুখতে পারবে না।’
বলে রাখি, রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলছে আদালতের নির্দেশে। তদন্তে নেমে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব ও দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ২টি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করে। এই দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ও জীবনকৃষ্ণ সাহা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই দুর্নীতির তদন্ত ইতিমধ্যে শেষ করেছে সিবিআই। চলতি মাসেই শুরু হবে শুনানি। ৬ মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে যাবতীয় শুনানি শেখ করার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। দুর্নীতি যে হয়েছে তা ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকার করে নিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
এছাড়া রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর বিরুদ্ধে রেশনের চাল ও গম খোলা বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ধান ক্রয়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য বালুর বিরুদ্ধে। জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে যোগ থাকায় ইতিমধ্যে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূলি পুরপ্রধান শংকর আঢ্যকে গ্রেফতার করেছে ED। এছাড়া সন্দেশখালির তৃণমূলি গুন্ডা শেখ শাহজাহানকে খুঁজছেন তদন্তকারীরা।