বরপেটা লোকসভা কেন্দ্র ২০২৪: ভোটের ফ্যাক্টর, অতীতের ফলাফল - একনজরে সব তথ্য
2 মিনিটে পড়ুন . Updated: 07 May 2024, 07:16 AM IST
অসম রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত বরপেটা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা কেন্দ্র। বোঙ্গাইগাঁও, অভয়পুরী উত্তর, অভয়পুরী দক্ষিণ, পাতাচারকুচি, বরপেটা, জানিয়া, বাগবার, সারুখেত্রী, চেঙ্গা ও ধর্মপুর এই দশটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে বরপেটা লোকসভা কেন্দ্র গঠিত। ১৯৫২ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই এই লোকসভা কেন্দ্রটিতে ভোট অধিগ্রহণ হয়ে আসছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী আব্দুল খালেক জয়ী হন। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বরপেটা লোকসভা কেন্দ্রের ঐতিহাসিক ফলাফল। এই কেন্দ্রটি কোন সময়েই তফশিলি জাতি বা উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ছিল না। ১৯৫২ সালের লোকসভা নির্বাচনে বারপেটা কেন্দ্রটি থেকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বেলি রাম দাস জয়যুক্ত হন। ১৯৫২ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফের আর একবার জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী রেনুকা দেবী এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।
১৯৬৭ সালের লোকসভায় এফ এ আহমেদ জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজিএস-এর প্রার্থীকে ৫৮ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন। এরপর ১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফের জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী ফারুকউদ্দিন আলি আহমেদ এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। বরপেটা লোকসভা কেন্দ্রটি ১৯৭৭ এবং ১৯৮৫ সালেও জাতীয় কংগ্রেসের দখলে থাকে। এই দুটি লোকসভায় যথাক্রমে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ইসমাইল হোসেন খান এবং আতুর রহমান জয়যুক্ত হন। ১৯৯১ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রটি জাতীয় কংগ্রেসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)। কংগ্রেসের প্রার্থীকে সিপিআইএম প্রার্থী ৫৩ হাজারের কাছাকাছি ভোটে পরাজিত করেন।
১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে অসম রাজ্যে বিজেপির ভোটের শেয়ার ছিল ১৬ শতাংশ, কংগ্রেসের ভোটের শেয়ার ছিল ৩১.৬ শতাংশ এবং অসম গণ পরিষদের ভোটের শেয়ার ছিল ২৭.২ শতাংশ। এই নির্বাচনে সিপিআইএম ৩.৯ শতাংশ ভোট পায়। বরপেটা কেন্দ্রটিতে সিপিআইএম প্রার্থী, প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক উদ্দব বর্মন এই কেন্দ্রটি থেকে ৬৭ হাজার ৫০০ ভোটে জয়ী হন। ১৯৯৮ সালের লোকসভায় এই কেন্দ্রটি ইউএমএফ-এর দখলে যায়। বিজেপি প্রার্থী মঞ্জুশ্রী পাঠককে হারিয়ে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন গোলাম ওসমান। ১৯৯৯ এবং ২০০৪ পরপর দুটি লোকসভা নির্বাচনে গোলাম ওসমান এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন, তিনি জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী ইসমাইল হোসেন অসম গণপরিষদের ভূপেন রয় কে ৩০ হাজার ৪২৯ ভোটে পরাজিত করেন ২০০৯ সালের নির্বাচনে ৭২ দশমিক আট শতাংশ মানুষ ভোটদানে অংশগ্রহণ করেছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বারপেটা কেন্দ্রটি থেকে এইউডিএফ-এর প্রার্থী সিরাজউদ্দিন আজমল বিজেপির চন্দ্র মোহন পাতুয়ারিকে তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। এই নির্বাচনে ৮৪.৩ শতাংশ মানুষ ভোটদানে অংশগ্রহণ করেছিল ২০১৯ সালের লোকসভায় এই কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল খালেক এক লক্ষ ৪০ হাজার ৩০০ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন।
২০১৯ সালের লোকসভাতে ও ব্যাপক পরিমাণে ভোটদান লক্ষ্য করা গেছে বরপেটা কেন্দ্রে। ২০২১ সালের অসম লোকসভা নির্বাচনে বরপেটা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা গুলিতে কেমন ফলাফল হয়েছিল সেদিকে চোখ রাখা যাক। বঙ্গাইগাঁও কেন্দ্রটিতে ফণীভূষণ চৌধুরী অসীম গণপরিষদের পক্ষ থেকে ৩৮ হাজার ১০০ ভোটে জয়ী হন অভয়পুরই উত্তর কেন্দ্রটিতে জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল বাতিন খন্দকার জয়ী হন। অভয় বুড়ি দক্ষিণ বরপেটা বাগবার এবং সারুখেত্রী কেন্দ্রগুলিতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থীরা জয়যুক্ত হয়েছিলেন। অন্যদিকে পাতাচার কুচি এবং ধর্মপুর কেন্দ্র দুটিতে বিজেপির পক্ষ থেকে যথাক্রমে রঞ্জিত কুমার দাস এবং চন্দ্র মোহন পাটোয়ারী বিধায়ক নির্বাচিত হন। এছাড়া জানিয়া ও চেঙ্গা কেন্দ্র দুটিতে ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর পক্ষ থেকে যথাক্রমে ডক্টর রফিকুল ইসলাম এবং আশরাফুল হোসেন জয়যুক্ত হয়েছিলেন সার্বিকভাবে ২০১৯ এবং ২০২১ এর নির্বাচন দুটির প্রেক্ষিতে বরপেটা কেন্দ্রে বর্তমানে কংগ্রেস অ্যাডভান্টেজ অবস্থানে থাকলেও ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফান্ড এবং বিজেপি দুটি দলেরই কিছু কিছু ভোট শেয়ার রয়েছে।