রেশন দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। দুর্নীতির অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তার আগেই ইডির জালে ধরা পড়েছেন বনমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। যদিও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, আগামীকাল ৬ নভেম্বর তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন আদালতে। এই আবহে শনিবার সকাল থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তে হানা দেয় ইডি। কোথাও ২৩ ঘণ্টা, কোথাও ২৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি অফিসাররা। হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় চালকলে এখনও তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন ইডি অফিসাররা। চালকলের গেট বন্ধ করে তল্লাশি চালাচ্ছেন তাঁরা। রেশন বন্টন দুর্নীতিতে এই চালকল কি বড় সূত্র? উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে জালান কমপ্লেক্সের অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডে একটি আটা তৈরির কারখানা এবং গোডাউনে হানা দেয় ইডি। সারাদিন ধরে তদন্তকারী অফিসাররা ওই আটা তৈরির কারখানার একাধিক নথি খতিয়ে দেখেন। মাঝরাত থেকে সেখানে শুরু হয় তল্লাশি। শনিবার রাতভর গেট বন্ধ করে চলে তল্লাশি অভিযান। কারখানাটি ঘিরে রাখে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আজ, রবিবার ভোরে এখান থেকে বেরিয়ে যান তদন্তকারীরা। হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার নানা চালকল, আটা কল এবং কারখানা মালিকদের বাড়ি, অফিসে তল্লাশি শুরু হয়। রাইস মিলের আটা কারখানায় ইডি তল্লাশি শুরু হয়। সব মিলিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোডের অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডের আটার প্যাকেজিং সংস্থায় হানা দেয় ইডি। শনিবার সকাল ৮টা থেকে সেখানে তল্লাশি চলে। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর আজ, রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান ইডি অফিসাররা। ওই বাড়ি থেকে অনেক নথিপত্র এবং ইলেকট্রনিক্স গেজেট সংগ্রহ করেছে ইডির অফিসাররা বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতির মধ্যেই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করেন বনগাঁর ব্যবসায়ী কালীদাস সাহা। তিনি জানান, রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে চিনতেন।
আরও পড়ুন: তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, সিপিএমের বৈঠকে উঠল আওয়াজ
ইডি সূত্রে খবর, রেশনের আটা এখানে এনে প্যাকেটবন্দি করে খোলা বাজারে বিক্রি করা হতো। সংস্থার মালিক অঙ্কিত চন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রেশনের চাল, ডাল তাঁর সংস্থার অফিসে প্যাকেজিং হয়ে কালোবাজারি করার জন্য বাজারে চলে আসত। সেই বিষয়ে খোঁজ পেয়েই তল্লাশি করা হয় কারখানাতে। বাকিবুরকে জেরা করে একাধিক তথ্য হাতে এসেছে ইডির। খোঁজ মিলেছে সম্পত্তির। নানা জেলার চালকল এবং আটাকলের সঙ্গে রেশন সরবরাহের কোনও যোগাযোগ ছিল কিনা সেটা খোঁজ চালাচ্ছে ইডি। ভুয়ো রেশন কার্ড ব্যবহার করে চালকল এবং আটাকলের মাধ্যমে বছরের পর বছর রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করা হতো।