আজ রাজ্যজুড়ে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা। তার মধ্যেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা। বহু পুরনো বড় রথ সাজিয়ে রাস্তা নামানো হয়েছিল। কিন্তু সেই রথেই ধাক্কা দিল একটি বেপরোয়া ট্রাক। যার জেরে রথের চাকা ভেঙে গেল। দাসপুরের হরিরামপুর গ্রামে এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। তারপর তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই বাসিন্দাদের দাবি, রথ মেরামত করে দিতে হবে ওই ট্রাক মালিককে। পুলিশের হস্তক্ষেপে তিন ঘণ্টা পথ অবরোধের পর তা উঠল। তবে রথ যদি আগের অবস্থায় না ফেরে তাহলে আবার অবরোধ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি তাঁদের।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, এই রথটি শতাব্দী প্রাচীন। প্রত্যেক বছর রথের সময় তা বের করা হয়। আবার এলাকায় ঘুরিয়ে তা তুলে দেওয়া হয়। এবারও তার অন্যথা হয়নি। এই রথটি সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। যাতে গ্রামের মানুষ রথের দড়ি টেনে উৎসব পালন করতে পারে। এই রথ সাজিয়ে তোলার পর দাসপুর–মেদিনীপুর রাজ্য সড়কের উপর রাখা হয়েছিল। তাতেই পাঁশকুড়াগামী একটি ট্রাক ধাক্কা মারে। তার জেরে রথের চাকা ভেঙে যায়। এই ঘটনার পরই রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন হরিরামপুরের বাসিন্দারা। পুলিশ সেখানে এসেও অবরোধ তুলতে পারেনি। পরে গ্রামবাসীদের আশ্বাস দেওয়ায় তা উঠে যায়।
রথের সঙ্গে সবারই একটা আবেগ জড়িয়ে আছে। সেখানে রথের চাকা ভেঙে দেওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। এমনকী এখানের রথ কমিটি রাজ্য সড়কের উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাতে চরম উত্তেজনা দেখা দেয় এলাকায়। তার জেরে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। বিক্ষোভকারীরা দাবি তোলেন, যে ট্রাকটি রথকে ধাক্কা দিয়ে চাকা ভেঙেছে তার চালক ও মালিককে রথ মেরামত করে দিতে হবে। না হলে অবরোধ তোলা হবে না। পুলিশ ওই ট্রাকটিকে চালক–সহ আটক করেছে। মালিককে থানায় ডাকা হয়েছে থানায়। রথ মেরামতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর।
রথ কমিটি ঠিক কী বলছে? এই ঘটনার পর তেতে উঠেছে গোটা গ্রাম। গ্রামের রথ কমিটির সম্পাদক রাজকুমার বেরা সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এটা গ্রামের মানুষের একটা আবেগের বিষয়। সেখানে রথের চাকা ভেঙে দেওয়া কেউ মেনে নিতে পারছেন না। মেরামত না করলে রথ টানা যাবে না। তাই সেই দাবিতে পথ অবরোধ করা হয়েছিল।’ ঘাটালের এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী, ওসি অমিত মুখোপাধ্যায় রথ মেরামতির আশ্বাস দেওয়ায় পথ অবরোধ উঠে গিয়েছে।