মোটা টাকা মাইনের চাকরি। এই লোভ দেখিয়ে ভারতীয়দের রাশিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর ঘটনা বারবার সামনে এসেছে। এবার এই একই সমস্যায় দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইলেন কালিম্পংয়ের বাসিন্দা উরজেন তামাং। তাঁর অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁকে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপর তাঁকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হয়েছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গিয়ে আগে মৃত্যু হয়েছে হায়দরাবাদের এক যুবকের। এবার একইরকম প্রতারণার অভিযোগ করলেন বাংলার বাসিন্দাও। ৪৭ বছর বয়সের প্রাক্তন সেনা কর্মী উরজেন তামাং দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। চাকরি দেওয়ার অজুহাতে তাঁকে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়েছিল ট্রাভেল এজেন্টরা।
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মার্চ মাসেই এইরকম ঘটনা নিয়ে জানানো হয়েছিল, রাশিয়ায় আনুমানিক ২৪ জন এভাবে আটকে আছেন। তাঁদের সেখান থেকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যেই আবার একই অভিযোগ করলেন বাংলার এই বাসিন্দা। তাঁর যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি সেনার পোশাকে আছেন। সূত্রের খবর, তাঁর পরিবারের সদস্যরা সাহায্য চেয়েছেন ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে। কালিম্পংয়ের বাসিন্দা উরজেন তামাং প্রতারিত হয়ে রাশিয়া থেকে ভারত সরকারের সাহায্য চেয়েছেন। কালিম্পংয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও সাহায্য চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান অনিত থাপার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দোল উৎসবে ভিড় উপচে পড়ল শান্তিনিকেতনে, বসন্ত উৎসব হবে এপ্রিল মাসে
অন্যদিকে গত ১৮ জানুয়ারি দেশ ছেড়ে রাশিয়া যান উরজেন। তখন তাঁর পরিবারের সদস্যদের কোনও ধারণাই ছিল না সেখানে কী কাজ করতে যাচ্ছেন তিনি। উরজেন ভারতীয় সেনার প্রাক্তন সেনা কর্মী। তাঁর দাবি, চাকরির অজুহাতে তাঁকে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়েছিল ট্রাভেল এজেন্টরা। তারপরই তাঁকে সেনাবাহিনীতে জোর করে যোগ দেওয়ানো হয় বলে অভিযোগ। কালিম্পংয়ের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের চিবো পুরবুংয়ের বাসিন্দা উরজেন তামাং। উরজেনের স্ত্রী অম্বিকা তামাং এবং তাঁদের দুই সন্তান চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। রাশিয়া থেকে ফোন করেছিলেন ভারতীয় সেনার এই প্রাক্তন কর্মী। উরজেন স্ত্রীকে একটি ভিডিয়ো বার্তা পাঠিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা প্রচার করতে বলেছেন।
এছাড়া উরজেনের স্ত্রীর কথায়, গত শুক্রবার তাঁদের শেষ কথা হয়েছিল ফোনে। তখন এক ভিডিয়ো বার্তায় স্ত্রীকে পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন উরজেন। তিনিই স্ত্রীকে বলেছেন সরকারের সাহায্য চাইতে। এই নিয়ে উরজেনের একটি ভিডিয়ো বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। উরজেনকে মস্কোতে নিয়ে যাওয়া হয়। আট দিন মস্কোর এক হোটেলে রাখার পর তাঁকে সেনা শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই ভিডিয়োয় উরদেনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমাকে বাঁচান। যুদ্ধ করার জন্য আমাকে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি ভারত সরকারের কাছে আবেদন করছি, আমাকে বাঁচান।’