বিগত দিনগুলিতে সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক দলের নেতাদের ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছে পুলিশ। এরই মাঝে অবশ্য কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে সন্দেশখালিতে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীরা। গতকাল পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সন্দেশখালি ঘোরেন সিপিএমের মীনাক্ষীও। তবে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে একাধিক কমিশনের আধিকারিকরা গিয়েছেন সন্দেশখালিতে। এছাড়া তৃণমূলের নেতামন্ত্রীরা সন্দেশখালিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কথা শুনে এসেছেন। তবে আজ দিল্লি থেকে আসা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে সন্দেশখালিতে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। পরে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিং দাবি করে, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা সন্দেশখালিতে গেলে অশান্তি ছড়াতে পারে, এই যুক্তিতেই নাকি দিল্লির দলের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। (আরও পড়ুন: আইপ্যাক কর্মী সেজে 'পকেট কাটা' হল হুমায়ুন কবীরের, মন্ত্রী করতে নেওয়া হল ঘুষ!)
আরও পড়ুন: বিয়ে হচ্ছিল না এলাকার ছেলেদের! ঘটকালির পথ সুগম করলেন বিধায়ক, ২ কোটি দিলেন 'দিদি'
এদিকে আজ সকাল থেকে ফের শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনতে সন্দেশখালিতে ঘুরতে থাকেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। বেড়মজুরে একটি কীর্তনের আসরে যোগ দেন মন্ত্রীরা। সেখানে পার্থ, সুজিতকে নাচতে দেখা যায়। খোলও বাজান পার্থ ভৌমিক। তৃণমূল মানুশের পাশে আছে বলে বার্তা দেন তাঁরা। তবে এই সবের মাঝেই আজ সন্দেশখালির পথে বাধা পেল প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এদিন ভোজেরহাট হয়ে সন্দেশখালি আসছিল ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। এদিকে সেই দলকে রুখতে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা সন্দেশখালিতে ঢুকতে চাইলে তাদেরকে প্রথমে বাধা দেয় পুলিশ। সেই দলের নেতৃত্বে আছেন পটনা হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এল নরসিংহ রেড্ডি। রবিবার ১৪৪ ধারা জারির কারণে সন্দেশখালির ৫২ কিলোমিটার দূরে ভোজেরহাট এলাকাতেই আটকানো হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে। এর আগে জাতীয় মহিলা কমিশন, জাতীয় তফশিলি কমিশন, জাতীয় আদিবাসী কমিশন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সন্দেশখালিতে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এসেছে। একাধিক কমিশন রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশও করেছে। তবে এবার সন্দেশখালির পথে বাধা প্রাপ্ত হল কেন্দ্রীয় সত্যসন্ধানী দল। এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোজেরহাটে গ্রেফতার করা হয় কমিটির সদস্যদের।
উল্লেখ্য, বিগত ৫ জানুয়ারি থেকে শাহজাহানের খোঁজ চলছে। তবে তিনি আজও অধরা। এরই মাঝে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এই আবহে এখন রাজ্য রাজনীতির সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় সন্দেশখালি। প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। সেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। কয়েকদিন পরই সন্দেশখালিতে শাহজাহান, তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়। সেই শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে সন্ত্রাসের রাজ চালানোর অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর, হুমকি, অত্যাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী। পরবর্তীতে উত্তম এবং শিবুকে গ্রেফতার করা হয়। তবে শাহজাহান এখনও অধরা।