বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত নাম ভরপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বকুনি', জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে 'বিদ্রোহ' সহ একাধিক কারণেই খবরে থেকেছেন হুমায়ুন। এহেন তৃণমূল বিধায়ক নাকি এবার প্রতারণার শিকার। রিপোর্ট অনুযায়ী, হুমায়ুন মন্ত্রী করার নামে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নিজেকে আইপ্যাক কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন হুমায়ুনের কাছে। যদিও পরে জানা যায়, মোটেও সেই ব্যক্তি আইপ্যাকের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে ইতিমধ্যেই সেই ব্যক্তির ফাঁদে পা দিয়ে হুমায়ুন ৮৬ হাজার টাকা খুইয়েছেন। ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেই অভিযুক্তকে। ধৃতের নাম অঞ্জন কুমার বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। (আরও পড়ুন: বিয়ে হচ্ছিল না এলাকার ছেলেদের! ময়দানে নামলেন বিধায়ক, ২ কোটি টাকা দিলেন 'দিদি')
রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, হুমায়ুন কবীরের থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন সেই ভুয়ো আইপ্যাক কর্মী। বদলে কী কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল হুমায়ুনকে? তৃণমূল বিধায়কের দাবি, এই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে তাঁকে রাজ্যের পূর্ণ মন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এমনকী নিজের পছন্দ মতো দফতরও নাকি বেছে নেওয়ার বিকল্প দেওয়া হয়েছিল হুমায়ুনকে। এছাড়াও লোকসভা ভোটের আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল হুমায়ুন কবীরকে। এই গোটা 'প্যাকেজের' বিনিময়ে হুমায়ুনের থেকে ১০ লাখ টাকা 'ঘুষ' চাওয়া হয়েছিল। তৃণমূল বিধায়ক ইতিমধ্যেই সেই ব্যক্তিকে ৮৬ হাজার টাকা দিয়ে ঠকেছিলেন। তবে সেই ব্যক্তি নাকি হুমায়ুনকে ক্রমাগত ফোন করে যেতেন। শেষে বিরক্ত হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন হুমায়ুন কবীর।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে আইপ্যাক নামক জনপ্রিয় ভোট কুশলী সংস্থাকে নিয়োগ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযুক্ত সেই সংস্থার কর্মী হিসেবেই নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন বিধায়কের কাছে। হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে হুমায়ুনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। এই আবহে প্রথমে কিছু টাকা চাওয়া হয়েছিল হুমায়নুকে মন্ত্রী করার নামে। সেই টাকা দেওয়ার পর 'দাবি' বেড়ে যায় অভিযুক্তর। তাতে সন্দিহান হয়ে পড়েন হুমায়ুন। এরপর পুলিশে অভিযোগ করেন হুমায়ুন। পরে বারাসত পুলিশ মধ্যমগ্রাম থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেন। অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে পুলিশ। হুমায়ুনের বক্তব্য, আইপ্যাকের প্রতীক জৈন এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নাম করে তাঁর থেকে ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। ধৃত নাকি তাঁর দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই প্রতারণা সংক্রান্ত আরও তথ্য পেতে চাইছে পুলিশ।