শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য রাজা জুড়ে চালু করা হয়েছে শিশু শ্রমিক বিদ্যালয়। যেখানে শিশুদের বিনামূল্যে পড়াশোনা থেকে শুরু করে থাকা-খাওয়া এবং ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু শিশু শ্রমিক বিদ্যালয় কার্যত ধুকছে। ভাতা পাচ্ছে না পড়ুয়ারা, শিক্ষকরাও বেতন পাচ্ছেন না। যার জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৩৪ টি শিশু শ্রমিক বিদ্যালয় বন্ধ হতে চলেছে। এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের জাতীয় শিশুশ্রম প্রকল্প। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
জাতীয় শিশু শ্রম প্রকল্পের আওতায় শিশুদের মাসে ৭০০-৮০০ টাকা ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয় ৭ হাজার টাকা। কিন্তু, প্রায় তিন বছর ধরে পড়ুয়াদের ভাতা বন্ধ করে রয়েছে। শিক্ষকরা ও বেতন পাচ্ছেন না দেড় বছর ধরে। ফলে পড়াশোনা করা এবং পড়ানোর ক্ষেত্রে উৎসাহ হারাচ্ছেন পড়ুয়া এবং শিক্ষক উভয়েই। গত দু'বছরে করোনার কারণে স্কুলে পঠন পাঠন বন্ধ ছিল। ফলে শিশু শ্রমিকের সংখ্যাটা আগের চেয়ে বেড়েছে। যা উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে শিক্ষকমহল। শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের উৎসাহ হারানোর কথা কার্যকর স্বীকার করে নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ঝাড়বনি এনসিএলপি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিতকুমার দত্ত বলেন, ‘যখন ছেলেমেয়েরা স্টাইপেন্ড পাচ্ছিল তখন তাদের অভিভাবকরা স্কুলে পাঠাতেন। এখন স্টাইপেন্ড পাচ্ছে না তাই স্কুলে আসছে না।’ গোকুলপুর শিশু শ্রমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক জানা বলেন, ‘টাকা না পেলে সংসার চলবে না। তাই শিক্ষকরা উৎসাহ হারাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএম-এর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাটা ভেঙে চুরমার করে দিতে পারলে ওদের কাজ করার সুবিধা হবে।’জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যান অজিত মাইতি বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শ্রমিকদের ওপর আঘাত হচ্ছে।’ পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি শমিত কুমার দাস।