রাজ্যে আরও কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ করতে চায় রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। একাধিক নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। রাজ্য, জেলা এবং মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলি আধুনিক হয়েছে। মানুষজনকে এখন কম স্থানান্তরিত হতে হচ্ছে। সব দিক দিয়ে তৎপর রয়েছে স্বাস্থ্যভবন। কিন্তু চিকিৎসকদের গা–ছাড়া মনোভাবে সরকার খুশি নয় বলে অভিযোগ। তাই চিকিৎসক এবং সার্জেনদের রোগী দেখা থেকে শুরু করে অপারেশন করার সংখ্যা বেঁধে দিল রাজ্য সরকার। মানুষের স্বার্থে এই কাজ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
বিষয়টি ঠিক কেমন ঘটেছে? মানুষজন সরকারি হাসপাতালে গিয়ে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। আবার অপারেশনের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। তাই মানুষের স্বার্থে আউটডোরে রোগী দেখা এবং অপারেশন করার সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জারি হয়েছে নির্দেশ। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট সূত্রে খবর, একজন চিকিৎসক হাসপাতালের আউটডোরে এক মাসে অন্তত ১ হাজার ৯৫০ রোগী দেখবেন। আর একজন সার্জেনকে সপ্তাহে অন্তত সাতটি বড় অপারেশন করতেই হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর বলে সূত্রের খবর।
চিঠিতে কী লেখা রয়েছে? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত ৩১ অগস্ট স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব সমস্ত জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, রোগী দেখার হার বাড়াতে হবে। তার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। ২৩ এপ্রিল থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন মাসে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালে রোগী দেখা এবং অপারেশনের পরিসংখ্যান চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বলা হয়েছে, রাজ্যের ১৯টি মেডিক্যাল কলেজ, ১১টি জেলা হাসপাতাল, ৩১টি মহকুমা হাসপাতাল, ২৩টি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং ১১টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অপারেশনের সংখ্যা অত্যন্ত কম। ২০টি মেডিক্যাল কলেজ, ১৪টি জেলা হাসপাতাল, ৩৪টি মহকুমা হাসপাতাল, ২৪টি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং ১১টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসকদের রোগী দেখার সংখ্যাও নগণ্য।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে যোগ দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, বিদেশ সফরের আগে নয়াদিল্লিতে
আর কী জানা যাচ্ছে? এই পরিস্থিতি মেনে নিতে রাজি নয় রাজ্য সরকার। সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। তার পরই এমন নির্দেশ–সহ চিঠি সর্বত্র পৌঁছে গিয়েছে। মানুষের স্বার্থেই এমন নির্দেশ বলে জানা যাচ্ছে। তাছাড়া গ্রিভ্যান্স সেলে এমন বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। যা হাতে আসার পর গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। তখন দেখা যায় অভিযোগ সত্য। আউটডোরে কম রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা। আর কম অপারেশন করছেন সার্জেনরা। তারপরই এমন নির্দেশ জারি হয়েছে। যা নিয়ে এখন বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, এটা কি টার্গেট ওরিয়েন্টেড জব নাকি? তবে স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, পরিষেবার মান উন্নত করতে ওই নির্দেশিকা নতুন করে দেওয়া হয়েছে।