টাটাদের কারখানা তৈরিকে কেন্দ্র করে একসময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল সিঙ্গুর। সেই তুমুল আন্দোলনের ঝড় উঠেছিল। রাজ্যে শাসক দলের পালা বদলে সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল সিঙ্গুর। সেই সিঙ্গুরের জমিতেই জুয়েলারি হাব তৈরি করতে চাইছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, তার জন্য জমির প্রয়োজন। তবে স্থানীয়দের বাধার মুখে এখনও পর্যন্ত জমি পাচ্ছে না প্রশাসন। ফলে সেখানে জুয়েলারি হাব তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় নতুন জমির সন্ধান করছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গী শাঁওলি মিত্রকে হারিয়ে শোকাভিভূত মমতা
জানা গিয়েছে, দ্রুত নতুন জমি খোঁজার জন্য জেলাশাসক জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজারকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই হাব তৈরি হলে সে ক্ষেত্রে কয়েক হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ হতে পারে। তাছাড়া বহু মানুষ স্বনির্ভর হবে বলেই মত প্রশাসনিক মহলের। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জমি না মেলায় জুয়েলারি ভাব তৈরির কাজ কিছুই এগোয়নি। প্রশাসনিক সূত্র জানা গিয়েছে, সিঙ্গুরের নসিবপুর পঞ্চায়েতের ০.২৩ একর সরকারি খাস জমিতে সিঙ্গুর ইমিটেশন জুয়েলারি ক্লাস্টার তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই জমিতে ৩৮টি ইউনিট তৈরি করা হবে। তারপরে অনুমান করা হয়েছিল এরফলে ৫ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে। জানা যায়, গত মার্চে এই জুয়েলারি হাব তৈরির জন্য জমি মাপতে গিয়েছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। কিন্তু, তারা সেখানে স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েন। ফলে তাঁরা ফিরে আসতে বাধ্য হন। এরপরে ব্লকের পদস্থ আধিকারিকরা সেখানে যান। কিন্তু, স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এই জমি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা কোনওদিন তা হতে দেবেন না। এখনও পর্যন্ত এনিয়ে জটিলতা কাটল না।
এই অবস্থায় নতুন জমি খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার সুমনালাল গঙ্গোপাধ্যায়।তিনি জানিয়েছেন, আগে যে জমি দেখা হয়েছিল তাতে সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণে নতুন জমি খোঁজা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব নতুন জমি খুঁজে দ্রুত হাব তৈরির কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে,আর্বিট্রাল ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছে সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ার জন্য টাটা গোষ্ঠীকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেইসঙ্গে টাকা না মেটানো পর্যন্ত ১১ শতাংশ হারে এই অর্থের ওপর সুদ দিতে হবে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার।