ট্রেনের ভেতরে উঠেছিল প্রসব যন্ত্রণা। রেল পুলিশ এবং রেল কর্মীদের তৎপরতায় কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন প্রসূতি। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান স্টেশনে। মিথিলা এক্সপ্রেসে স্বামীর সঙ্গে সফর করছিলেন ওই প্রসূতি। তখনই তার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। তখন রেলের তরফে তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে প্রসূতি সুস্থ সন্তানের জন্য দিতে সক্ষম হন। বর্তমানে মা এবং নবজাতক দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। রেলের এমন পদক্ষেপে আপ্লুত প্রসূতি এবং তার স্বামী।
আরও পড়ুন: ট্রেনের মধ্যে প্রসব করলেন অন্তঃসত্ত্বা, সাহায্যের জন্য এগিয়ে এল রেল
রেল সূত্রের খরব, ওই প্রসূতির নাম নিশা কুমার। স্বামী গোবিন্দ কুমারের সঙ্গে মিথিলা এক্সপ্রেসে করে বিহারের পূর্ব চম্পারণের সুগৌলির বাড়িতে ফিরছিলেন। সাধারণ কামরাতেই যাচ্ছিলেন তারা। ট্রেনটি ব্যান্ডেল স্টেশন পেরোনোর পরেই প্রসূতির প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। এমতাবস্থায় চিন্তিত হয়ে পড়েন তার স্বামী গোবিন্দ কুমার। তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তখন অন্যান্য যাত্রীদের পরামর্শে রেল কর্মী ও পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় বর্ধমান স্টেশনে। সেইমতো বর্ধমান স্টেশনে প্রস্তুত ছিলেন চিকিৎসক এবং জিআরপি। এরপর সন্ধ্যা ৬:১০ টা নাগাদ ট্রেনটি বর্ধমান স্টেশনে দাঁড় করানো হয়।
স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মে ট্রেন থামার পরেই গৃহবধুর প্রসব যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়। তখন জিআরপির মহিলা কনস্টেবলরা গৃহবধূকে বর্ধমান স্টেশনে নামালে চিকিৎসকরা প্রসবের ব্যবস্থা করেন। অবশেষে স্টেশনেই এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি। এরপর মা এবং নবজাতককে ভর্তি করা হয় বর্তমান মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে বর্তমানে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। রেলের এরকম তৎপরতায় বেজায় খুশি হয়েছেন দম্পতি। প্রসূতির স্বামী জানান, ট্রেনের মধ্যে প্রসব যন্ত্রণা ওটাই তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না কী করবেন। পরে তিনি ট্রেনে কর্তব্যরত পুলিশ এবং রেল কর্মীকে জানান। তারাই বর্ধমান স্টেশনে যোগাযোগ করে সব ব্যবস্থা করেছেন। রেলের এই সাহায্যের জন্য তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত ট্রেনের মধ্যে প্রসব যন্ত্রণা ওটার ফলে সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে জুলাই মাসে ট্রেনের মধ্যেই প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় রেলের তৎপরতায় সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক বাংলাদেশি এক গৃহবধূ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মেচেদা স্টেশনে মুম্বই থেকে কলকাতায় ফেরার পথে ডাউন মুম্বাই মেলে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। পরে রেল পুলিশ এবং প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার আগে জুন মাসে ট্রেনের মধ্যেই সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের এক গৃহবধূ। শিলচর আরোনাই এক্সপ্রেসে করে তিনি স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই ট্রেনের মধ্যে তাঁর প্রসব বেদনা শুরু হয়। এরপরে ট্রেনে থাকা রেলের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মহিলার স্বামী। তৎপরতার সঙ্গে রেলের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় চিকিৎসকদের। ট্রেনটি বর্ধমান স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মে ঢোকা মাত্র চিকিৎসক এবং নার্সরা ট্রেনের এস ১২ নম্বর কামরায় চলে যান। সেখানে চিকিৎসকদের তৎপরতায় নির্বিঘ্নে সন্তান প্রসব করেছিলেন ওই মহিলা।