সব্যসাচী দত্ত তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার পর থেকেই সল্টলেকে গোষ্ঠীকোন্দল শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, থানায় পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আর তা জেলা নেতৃত্বের কানে পৌঁছেছে। তাতে বেজায় চটেছে নেতৃত্ব। কারণ এইসব খবর প্রকাশ্যে এলে বিরোধীরা সুযোগ নিতে পারে। সেটা চায় না তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই সমস্যা সমাধানে আগামী বৃহস্পতিবার জেলার নেতৃত্ব বিধাননগরের নেতাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে চান বলে সূত্রের খবর।
অভিযোগ, সল্টলেকের সিই ব্লকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির সঙ্গে ব্লকের যুগ্ম সম্পাদক উদয়ন সরকারের ছবি ছিল। সেটা কে বা কারা ছিঁড়ে দেয়। তা নিয়েই হয় গণ্ডগোলের সূত্রপাত। এই ঘটনার পরই তিনি ওই এলাকার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কো–অর্ডিনেটর সুপ্রিয় চক্রবর্তী এবং সুজিত বসুর ছেলে সমুদ্র বসুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই নিয়ে সুপ্রিয় চক্রবর্তী দাবি করেন, উদয়ন সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ না। পাল্টা উদয়নের বিরুদ্ধে থানায় নালিশ ঠোকা হয়। তাতেই চরমে উঠেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
জানা গিয়েছে, উদয়নবাবু বরাবরই সব্যসাচী দত্তের শিবিরের লোক বলেই পরিচিত। তাই সব্যসাচী নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে বলেও অনেকে মনে করছেন। কারণ সব্যসাচীর সঙ্গে সুজিত বসুর সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত বলেই সবাই জানে। আর সুপ্রিয়বাবু মন্ত্রী সুজিতবাবুর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের। তাই সব্যসাচী যেমন পিছন দিক দিয়ে প্রভাব বাড়াতে চাইছেন তেমনই মন্ত্রীও ব্যাকডোর দিয়েই খেলে দিচ্ছেন। নীচুতলার নেতাদের মধ্যেই এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গেলেও আসলে লড়াইটা মাথায়–মাথায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার নেতা বলেন, ‘দুষ্কৃতীরা নেত্রীর ছবির সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে হোর্ডিং ঝোলাবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই জেলা নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছি, হোর্ডিংয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কারা ছবি দিতে পারবেন, তার একটা গাইডলাইন তৈরি করতে।’ এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি দেখা গিয়েছে রাজারহাট–গোপালপুরেও। এখানের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কো–অর্ডিনেটর রতন মৃধা। এখানের আগের কাউন্সিলর শিবু ভান্ডারি সব্যসাচীর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল বলে রতনকে কো–অর্ডিনেটর করা হয়। সূত্রের খবর, এই রতনের নামে পুলিশের খাতায় অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করে বিধাননগর পুরসভায় স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। আর তাঁকে অপসারণের দাবি করা হয়েছে। রতন নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় এবং রাজারহাটের যুব নেতা দেবরাজ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ। আর তাপস চট্টোপাধ্যায় সব্যসাচীর বিরোধী। সুতরাং অঙ্ক পরিষ্কার। লড়াই আসলে উপরের স্তরে। নীচুস্তর দিয়ে শুধু খেলা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।