সাঁওতালি ভাষাতে প্রথম পাঠনের দাবিতে দেশের প্রথম আদিবাসী সম্প্রদায় ভুক্ত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আবেদন জানালেন এক সাঁওতাল মহিলা। তাঁর দাবি, সাঁওতালি ভাষায় নদিয়া জেলায় কোনও বিদ্যালয় নেই বলে মাতৃভাষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ। তাই সাঁওতালি ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদীকে চিঠি লিখলেন মীরু মুর্মু নামে বছর পঞ্চান্নর ওই মহিলা। তিনি লেখাপড়া জানেন না তবে অন্যের সাহায্য নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে এই চিঠি লিখেছেন।
হাঁসখালি থানার ময়ূরহাটের উত্তর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার বক্তব্য, সেখানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। কিন্তু, তাদের মধ্যে শিক্ষার হার অত্যন্ত কম হওয়ায় তারা সামাজিক এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে। জেলার মধ্যে কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। নতুন প্রজন্ম মাতৃভাষা শিক্ষার সুযোগ না পাওয়ায় তাদের অলচিকি হরফ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। মাতৃভাষায় কোনও স্কুল না থাকায় বাধ্য হয়ে নতুন প্রজন্মকে অন্য স্কুলে পড়তে হচ্ছে। তাই আগামী প্রজন্ম যাতে মাতৃভাষাতে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করতে পারে তার জন্য এলাকায় নতুন বিদ্যালয় তৈরির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছেন মীরু মুর্মু। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রপতি যেহেতু নিজেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের তাই তিনি তাদের ভাবাবেগকে হয়তো গুরুত্ব দেবেন।
প্রসঙ্গত, সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আসলেও এখনও এই সমস্ত প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা থেকে এখানে তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের পরিবার বঞ্চিত রয়েছে। এ বিষয়ে ময়ূরহাট এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেস সহ-সভাপতি অনিল কুমার বাগ বলেন, ‘আমরা তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রশাসনিক বাধার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।’ অন্যদিকে এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এক কথা আর দলের নেতাদের মুখে আরেক কথা।’ তিনি বলেন, ‘আমি চাই জেলায় সাঁওতালি ভাষায় স্কুল তৈরি হোক।’ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এ নিয়ে সমস্যার সমাধান করবেন বলে তিনি মনে করেন।