কসবা কাণ্ডের পর বিভিন্ন জায়গায় টিকা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে কলকাতায়। ঠিক সেই সময় আরেক ধরনের টিকা জালিয়াতি ধরা পড়ল খড়গপুরে। সেখানকার এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে টিকাপ্রাপকদের কাছ থেকে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর যেই রসিদ দেওয়া হচ্ছিল, সেখানে কোনও সিরিয়াল নাম্বার উল্লেখ করা ছিল না বলে অভিযোগ।
রবিবার মহকুমা শাসক ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা খড়গপুরের ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে। সরকারি আধিকারিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিককে গ্রেফতার করেছে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক আজমল হোসেন বলেন, ‘ ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার করোনা টিকা দেওয়ার নামে টাকা তুলছিল। তাদের সরকারি কোনও অনুমোদন ছিল না। এমনকী, টিকা প্রাপকদের কাছ থেকে যে ১১৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল, তার বদলে দেওয়া রসিদে কোনও সিরিয়াল নম্বর উল্লেখ করা ছিল না। এমনকী, টিকা নেওয়ার তারিখ আগে ঘোষণা করা হলেও ২৮ জুনে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার খড়গপুর রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘অভিযান চালিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আবির বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় ভুয়ো টিকা কেন্দ্র প্রকাশ্যে আসার পরই খড়্গপুরের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টিকা দেওয়ার বিষয়ে নিয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারাই বিষয়টি স্বাস্থ্যদফতর ও থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয়দের তরফে অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে জেলা প্রশাসন। এদিন ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হানা দেয় মহকুমা শাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। সেখানে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন, ওই সেন্টারে ১১৫০ টাকা নিয়ে টিকা দেওয়া হচ্ছিল। ২৮ জুন টিকা নেওয়া তারিখ ঘোষণা করে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তার আগেই এই চক্রের পর্দা ফাঁস করল জেলা প্রশাসন। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হানা দেয় জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। এর পর তাঁরা ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের কাছে নথিপত্র দেখতে চান। তদন্তকারীদের অভিযোগ, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষ টিকা দেওয়া সম্পর্কিত কোনও বৈধ নথিপত্র দেখাতে পারেননি। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্যদফতরের নিয়ম অনুযায়ী যেখানে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে তবেই টিকাদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। তদন্তকারীদের অভিযোগ, এক্ষেত্রে তেমন কিছুই হয়নি। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই টিকা কেন্দ্রের আয়োজন করেছিল ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার। শুধু তাই নয়, টিকা প্রাপকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তোলা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।