রাস্তা নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়–রাজ্য সরকারের সংঘাত অব্যাহত। শুক্রবার বিশ্বভারতীর হাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়া রাস্তার উদ্বোধন হল। পাশাপাশি শান্তিনিকেতন দূরদর্শন কেন্দ্র লাগোয়া সুরশ্রী পল্লি যাওয়ার একটি রাস্তায় পাঁচিল তুলে সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেখানে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। আর সংগীত ভবনে প্রবেশের প্রধান রাস্তা সাধারণের প্রবেশের জন্য বন্ধ করে দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যে পদক্ষেপকে রাজ্যের ‘পালটা’ হিসেবেই দেখেছেন শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা এবং প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে প্রত্যাঘাত করার জন্যই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এই কাজ করেছে, যা নজিরবিহীন। তবে, পাঁচিলের বিষয়টি জানার পরই জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ওই এলাকা পরিদর্শনে যান। কোনও কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাঁরা নির্মাণকর্মীদের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।
সুবর্ণরেখা মোড় থেকে শ্রীনিকেতনের কালীসায়র পর্যন্ত ৩.৪ কিলোমিটার রাস্তাটি সম্প্রতি ফিরিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার। খোদ মুখ্যমন্ত্রী বোলপুর সফরে এসে সেকথা ঘোষণা করেছিলেন। পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা ওই রাস্তা ২০১৭ সালে বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তারপর থেকেই বিভিন্ন উৎসব–অনুষ্ঠানে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে বাধা দেওয়া হচ্ছিল বলে আশ্রমিকরা অভিযোগ তুলছিলেন।
জানা গিয়েছে, জবরদখল এবং আশ্রমের সার্বিক নিরাপত্তার যুক্তিতে আশ্রম সংলগ্ন শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতনের মধ্যবর্তী প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার অধিকার বিশ্বভারতীরই অনুরোধে তাদের দিয়েছিল রাজ্য। তারপরে কারণে-অকারণে রাস্তা বন্ধ করায় তাঁদের নানা সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগে আশ্রমিকরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন। ২৮ ডিসেম্বর বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ওই রাস্তা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেন।
সুরশ্রী পল্লি যাওয়ার রাস্তায় বিশ্বভারতী পাঁচিল তোলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাস্তাটি বন্ধ করে বিশ্বভারতী খুব অন্যায় করেছে। সাধারণ মানুষকে অনেকটা ঘুরপথে যেতে হবে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘পাঁচিল দিয়ে বিশ্বভারতী অন্যায় করেছে। প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে।’ এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বীরভূমের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে জানতে চাইব, এই রাস্তা বন্ধ করার উদ্দেশ্য কী? জনগণ যদি সমস্যায় পড়েন, তাঁরা প্রশাসনের কাছেই আসবেন। সবদিক দেখে সমাধানসূত্র খুঁজতে হবে।’ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই আজ রাজনীতির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। তাই বিশ্বভারতীও তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতের বাইরে সুরক্ষিত থাকতে পারছে না।’
ছে না।’