প্রাণহানির আশঙ্কা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক। ওই পোস্ট ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে শান্তিনিকেতনে। নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ওই আধিকারিকের নাম। তিনি রবীন্দ্রভবনে স্পেশাল অফিসার পদে আছেন। তিনি ‘নিঃস্ব ঐতিহ্য’ বলে একটি কবিতা লিখে উপাচার্যকে নাম না করে কটাক্ষ করেন। আর নিজের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সংঘাত প্রকাশ্যে চলে আসে। যদিও এখনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেই বিশ্বভারতী সূত্রে খবর।
এদিকে আগামী ৮ নভেম্বর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। আর তার আগেই নিজে গাড়ি চালিয়ে এদিন বোলপুর ছাড়েন উপাচার্য। যা সবার চোখে পড়েছে। কিন্তু কেউ কোনও কথা বলেননি। উপাচার্যও নিজস্ব মেজাজে বেরিয়ে গেলেন। আর তারপরই প্রশ্ন উঠেছে, এই যাওয়াই কি শেষ যাওয়া? আর কি ফিরবেন না বিদ্যুৎ? নাকি আবার আসবেন বিশ্বভারতীতে? এমন সব প্রশ্ন উঠলেও তার উত্তর মেলেনি। শান্তিনিকেতন ক্যাম্পাসে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এই নিয়ে মুখ খোলেনি কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে নীলাঞ্জনবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাণহানির আশঙ্কা করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমার কাছে দুই গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা দুই অধ্যাপকের ফোন আসে। তাঁরা আমাকে মৌখিকবার্তা পৌঁছে দিয়ে অনুরোধ করেন, আমি যেন শুক্রবার কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ না করি। আমি এই রহস্যময়, অনৈতিক, কুরুচিকর প্রস্তাবের কোনও কারণ খুঁজে পাইনি। তাই তাঁদের জানাই, আমাকে যথাযথ মাধ্যমে কোনও লিখিত নির্দেশ না দিলে আমি বিপদ থাকলেও ঢুকব। আমি ওই উচ্চপদস্থ কর্তাদের নিযুক্ত কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির হাতে প্রাণহানির আশঙ্কা করছি।’ এই পোস্ট ফেসবুকে করতেই শোরগোল পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বাতিল করল ৯৪ জন শিক্ষকের চাকরি, টাকার বিনিময়ে কি নিয়োগ?
বিশ্বভারতীতে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ রবীন্দ্রভবন। এই ভবনেরই গুরুত্বপূর্ণ পদে নীলাঞ্জনবাবু আছেন। সূত্রের খবর, সম্প্রতি রবীন্দ্রভবনের একটি বিষয় নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে। আর উপাচার্য এই আবহে রবীন্দ্রভবন যাবেন বলে ওই দুই অধ্যাপককে জানান। সেখানে নীলাঞ্জনবাবু যাতে না যান সেই নির্দেশ মৌখিকভাবে দেওয়া হয়। নীলাঞ্জনবাবু লিখিত নির্দেশ না পেলে তা মানতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন বলে দাবি নীলাঞ্জনবাবুর। এরপরই দেখা যায়, দুপুরবেলায় উপাচার্যকে গাড়ি চালিয়ে শান্তিনিকেতন ছাড়ছেন। মেয়াদ শেষের আগে তিনি বিশ্বভারতী থেকে কোথায় যাচ্ছেন? উঠেছে প্রশ্ন। তবে ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কোনও মন্তব্য করব না।’