দক্ষিণ কলকাতার নামি বেসরকারি স্কুল সাউথপয়েন্টের বোর্ড সদস্য কৃষ্ণ দামানিকে সদ্য গ্রেফতার করা হয়েছে, আর্থিক দুর্নীতি ও টাকা পাচারের অভিযোগ ঘিরে। এদিন আদালত তাঁকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এর আগে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে কৃষ্ণ দামানিকে চেয়ে আবেদন করে কোর্টের কাছে। শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তাঁকে হাজির করা হলে, কোর্ট ওই নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশের অভিযোগ, দামানি তাঁর সংস্থার কর্মীদের নিয়োগ করতেন স্কুলে। এরপর, কম সংখ্যক কর্মী দিয়ে কাজ করিয়ে তিনি বেশি সংখ্যক কর্মী কাজ করেছে, এমন দেখিয়ে স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করতেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃত বোর্ড সদস্যের পুলিশি হেফাজতের আর্জি জানানো হয় কোর্টে। সেই মতো বিচারক ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁর পুলিশি হেফাজত দিয়েছেন। এদিকে, পুলিশ তার তদন্তের হাত ধরে বেশ কিছু নথি পেয়েছে। সেই নথিতে রয়েছে, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। উল্লেখ্য, শুক্রবার কোর্টে পুলিশ কিছু রিপোর্ট পেশ করে। পুলিশের দাবি, যে টাকা আত্নসাৎ করতেন কৃষ্ণ, তা তিনি তাঁর আত্মীয়দের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে রেখে দিতেন। আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে কৃষ্ণ টাকা পাচার করতেন বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, প্রায় আড়াই কোটি টাকা কৃষ্ণের পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। যে সংস্থার সঙ্গে কৃষ্ণ যুক্ত, সেই সংস্থার কাছেও গিয়েছে টাকা। দেখা গিয়েছে, ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কৃষ্ণর পরিবারের সদস্যরা। দাবি করা হচ্ছে, ভুয়ো ভাউচারের মাধ্যম টাকা পাচার হয়েছে।
এর আগে, স্কুল কর্তৃপক্ষ সদ্য পুলিশের দ্বারস্থ হয় কৃষ্ণের বিরুদ্ধে বড়সড় এই অভিযোগ ঘিরে। স্কুলের তরফে কৃষ্ণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ কৃষ্ণের বিরুদ্ধে তুলেছে স্কুল। এরপরই বৃহস্পতিবার অভিযোগের ভিত্তিতে কৃষ্ণ দামানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। শুক্রবারই তাঁকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত স্কুলের ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বোর্ড সদস্য কৃষ্ণ দামানি। এরপরই তদন্তে নেমে একাধিক জায়গা থেকে নথি সংগ্রহ করে পুলিশ। চলে পুলিশি তল্লাশি। কৃষ্ণ দামানির সংস্থার মালিকানা, সেখানের নথ, সমস্ত কিছুই রয়েছে পুলিশের ব়্যাডারে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ওই সংস্থা কী সংক্রান্ত কাজ করে, তাও। এই ১০ কোটির তছরুপের ঘটনায় আরও কেউ বা কারা জড়িত কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।