রোজকার যে ধরনের ভিড়টা দেখা যায় কলকাতা মেট্রোতে এদিন যেন ঠিক সেই ভিড়টা নয়। বাংলার দূর প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ মেট্রো স্টেশনে এসেছিলেন। নেত্রীর সভা শুনতে গেলেন তাঁরা। বাংলার দূর প্রান্তে থাকা সহজ সরল মানুষ। কারোর হাতে তৃণমূলের পতাকা। কেউ আবার সন্তানের হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছেন। ফি বছর এই দিনটাতে কলকাতায় আসেন তাঁরা। নেত্রীর বার্তা শোনেন। আর সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে যান কলকাতা দর্শনের অভিজ্ঞতা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই ছুটি গল্পের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে অনেকেরই।
এই যেমন ভাইপোকে সঙ্গে নিয়ে দিদির মিটিং শুনতে এসেছিলেন মন্টু শেখ। মুর্শিদাবাদে বাড়ি। আসার সময় ভাইপো বায়না ধরেছিল, কাকা আমাকেও নিয়ে চলো। কলকাতা দেখা হয়ে যাবে। ক্লাস সেভেনে পড়া ভাইপোকে নিয়ে চলে এলেন কাকা। ধর্মতলার রাস্তা ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। চারপাশে নানা বিল্ডিং রয়েছে। তাঁদের দু চোখে অপার বিষ্ময়।
মন্টু শেখ বলেন, দিদিকে দেখে, তাঁর কথা শুনেই চলে যাব। ভাইপো কোনওদিন কলকাতা দেখেনি। তাই নিয়ে এলাম। খুব ভালো লাগছে চারপাশটা দেখে।
পুরুলিয়া থেকেও দলে দলে এদিন এসেছিলেন ধর্মতলার সভায়। শহিদ মিনারের পাশেই জামাকাপড় শুকোতে দিয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলেন তাঁরা। কলকাতার গোলকধাঁধায় পাছে হারিয়ে না যান সেকারণে দূরে কোথায় যেতে চাননি তাঁরা। সঙ্গে করে মুড়ি ছোলাভাজা নিয়ে এসেছেন। সেই শুকনো মুড়ি খেয়েই মিটিং শুনতে গেলেন তাঁরা। কেউ কেউ আবার চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া যাওয়ার রাস্তার খোঁজ করেন। মিটিং শোনার পাশাপাশি শহর কলকাতাটার কংক্রিটের জঙ্গলকে একবার দেখে নিতে চান তাঁরা।
এদিকে ধর্মতলায় মিটিং শুনতে এসে বহুজন পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তবে তৃণমূলের মে আই হেল্প ইউ ক্যাম্প থেকে বার বার সেই পথ হারিয়ে ফেলা মানুষদের খোঁজ পেতে ঘোষণা করা হয়।