পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিয়ারনেস অ্যালোওয়েন্স বা ডিএ) বৃদ্ধির ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার পার্কস্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে খ্রিস্টমাস উৎসবের সূচনার মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষকদের চার শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাড়ছে। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতেরও ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
মমতার পুরো বক্তব্য
‘এই খ্রিস্টমাস উৎসবের আবহে পরিষেবা প্রদানকারী কর্মচারীদের জন্য একটি ঘোষণা করতে চলেছি। আপনারা শুনলে খুশি হবেন যে আমরা প্রতি বছরই কিছু না কিছু করি। আমরা অলরেডি ১২৫ শতাংশ ডিএ অ্যানাউন্স করেছিলাম। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬৫ টাকা দেওয়া হয়েছে। ১২৫ শতাংশ যখন ছিল, তখন ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কম টাকা দেওয়া হয়নি। চার বছরের মধ্যে আমরা (নয়া) পে স্কেল (বেতন কমিশন) করেছি আমরা। নয়া পে স্কেলের আওতায় ২০১৯ সাল থেকে রাজ্য সরকার ছয় শতাংশ ডিএ দিয়েছে। সেজন্য চার বছরে ৪,১৪৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।’
‘আজ বড়দিনের এই শুভ মুহূর্তে আমি ঘোষণা করছি যে আরও চার শতাংশ ডিএ দেওয়া হবে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে (সেটা কার্যকর হবে)। ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারী; সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী; রাজ্য সরকারি অধীনস্থ সব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা এই বর্ধিত ডিএ পাবেন। এটা সবাই পাবেন।’
‘গভর্নমেন্ট সার্ভিস হোল্ডার থেকে শুরু করে আমায় ফেডারেশন বারবার বলেছে, আমাদের যে ফেডারেশন আছে….. আমরা মাঝেমধ্যে এরকম দিই। যদিও আমাদের পে কমিশন (বেতন কমিশন) আছে। এটা আমরা এক্সট্রা দিই। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের ওরকম নেই। ওদের সার্ভিস রুল আলাদা। আমাদের সার্ভিস রুল আলাদা। আমাদের রাজ্যে এটা বাধ্যতামূলক। এটা ঐচ্ছিক। তা সত্ত্বেও আমরা দিয়ে যাই। কারণ আমাদের কর্মচারীরা দিনরাত পরিশ্রম করেন। তাঁদের ভালো ভেবেই আরও চার শতাংশ ডিএ বাড়ানো হল।’
‘এটা (১০ শতাংশ ডিএ, তাঁরা ছয় শতাংশ হারে ডিএ পান আপাতত চার শতাংশ ডিএ বাড়ানো হল) পয়লা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। আমাদের সব সরকারি কর্মচারী; সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী; রাজ্য সরকারি অধীনস্থ সব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা হ্যাপি নিউ ইয়ারের গিফট। তাতে অনেক মানুষ লাভবান হবেন। সেজন্য আমাদের ২,৪০০ কোটি লাগবে।’
‘আপনারা জানেন যে আমরা আমাদের প্রাপ্য অনেক টাকাই পাই না। তা নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং করে এসেছি। এখনও আমাদের ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া আছে। তা সত্ত্বেও আমরা যেটা দিতে পারছি……….২০১৯ সালের পরে ১০ শতাংশ ডিএ হয়ে গেল। ফলে আগে যেটা ছিল ১২৫ শতাংশ। এখন সেটা হল ১৩৫ শতাংশ। এই চার বছরের টা ক্যালকুলেশন করে (বললাম)। তাই একটু মিষ্টিমুখ, সুখনিন্দ্রা ও তাঁদের পরিবারের শুভ কামনা করি। ওঁরা এটা পাওয়ার যোগ্য।’