সাত ইঞ্চির আস্ত একটি পেরেক গিলে ফেলেছিল দু'বছরের শিশু। ২১ ঘণ্টা আটকে ছিল শ্বাসনালীতে। শিশুটিকে বাঁচানো যাবে কিনা, তাই নিয়ে রীতিমতো উৎকণ্ঠায় ছিলেন শিশুটি পরিবারের লোকেরা। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের হাত যশে মৃত্যু হাত থেকে বেঁচে ফিরে এল দুধের শিশুটি। বিরল অস্ত্রোপচারে এ যেন নবজন্ম লাভ হল।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার সকালে বাড়ির সামনে খেলা করছিল মুস্তাকিন আলি। ঘরে ফেরার পর থেকেই বমি করতে থাকে সে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। ক্রমেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখনই বাড়ির লোকের সন্দেহ হয়, কিছু একটা খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েছে মুস্তাকিন। কিন্তু সেটা কী হতে পারে, সেই বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারছিলেন না মুস্তাকিনের পরিবারের লোকেরা। সঙ্গে সঙ্গে মুস্তাকিনকে নিয়ে যাওয়া হয় রায়গঞ্জ হাসপাতালে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ধরা পড়ে শিশুটির শ্বাসনালিতে আটকে রয়েছে ৭ ইঞ্চির বিশাল মরচে ধরা পেরেক। কিন্তু সেই পেরেক বের করতে পারেননি সেখানকার চিকিৎসকরা। আস্তে আস্তে শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে। ক্রমাগত বমি করতে থাকেন মুস্তাকিন। শেষ পর্যন্ত মায়ের কোলে ঢোলে পড়ে সে। কিন্তু তাতে হাল ছাড়েনি মুস্তাকিনের পরিবারের লোকেরা। রবিবার খুব ভোরে এসএসকেএমে শিশুটিকে নিয়ে এসে পৌঁছোয় তাঁর বাড়ির লোকেরা। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা করা হয় ও দ্রুত অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়। এসএসকেএমের ইএনটি বিভাগের তত্বাবধানে শিশুটি প্রাণ ফিরে পেল।
এই প্রসঙ্গে এসএসকেএমের ইএনটি বিভাগের বিশেষজ্ঞ সুদীপ্তা মিত্র বলেন, ‘ওকে আমাদের কাছে রবিবার ভোরে আনা হয়েছিল। খুব শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪ থেকে ৯৫ এর বেশি উঠছিল না। সঙ্গে সঙ্গে ওটির ব্যবস্থা করে ইমার্জেন্সি রিজিড বায়োস্কোপি করা হয় ও পেরেকটিকে বের করা হয়। এখন বাচ্চাটি অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
এর আগেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিরল নজির রেখেছিল এসএসকেএম। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে এক তরুণীর লোহার রড ঢুকে গিয়েছিল। রড ঢুকে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। তখন তরুণীকে অস্ত্রোপচার করে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি একটি কিশোরীর গলায় সূচ ঢুকে গিয়েছিল। ফুসফুসের লোয়ার ল্যাবে তা আটকে গিয়েছিল। বায়োস্কোপি করে সেই আটকে থাকা সূচ বের করেছিলেন চিকিৎসকরা।