পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা একটু বাড়তেই সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্ন কেন্দ্রীয় সরকার করোনা পরীক্ষার কিট পাঠাচ্ছে না বলে সরব হলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নিজেদের কেনা কিট দিয়ে পরীক্ষা করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।
বিশ্বজোড়া সমালোচনার পর চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরীক্ষায় কিছুটা গতি এসেছে। আর তার জেরে কিছুটা বেড়েছে মোট নমুনা পরীক্ষা সংখ্যা। যদিও তা এখনও বড় রাজ্যগুলির থেকে অনেক পিছনে। এরই মধ্যে করোনা পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কিট পাঠাচ্ছে না বলে সুর চড়ালেন তিনি। এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে করোনা পরীক্ষা নিয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। তার পরই কেন্দ্রের উদ্দেশে আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন রাজীব সিনহা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এখনো পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৭০৩৭টি। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে ৮৫৫টি পরীক্ষা। এর মধ্যে ২৬ জনের নমুনা পজিটিভ এসেছে।
তিনি জনিয়েছেন, ৭০৩৫টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ৩৪৫৬টি আরএনএ এক্সট্রাক্টর (পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় এক রকমের রাসায়নিক) পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়া ২,৫০০টি ভাইরাস ট্রান্সফার মিডিয়াম (পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় আরেকটি জিনিস) পাঠিয়েছে ICMR. প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ২টি করে মিডিয়াম প্রয়োজন হয়। সেই হিসাব মতো আমাদের ১৪,০০০-এর বেশি মিডিয়াম লেগেছে। বাকি মিডিয়াম রাজ্য সরকার নিজে কিনেছে। এখনো ৪৫,০০০ মিডিয়াম অর্ডার দেওয়া আছে বলে জানান তিনি।
এর পরই মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী, সংবাদমাধ্যমের একাংশ পশ্চিমবঙ্গকে বদনাম করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘ভাবটা এমন যেন পশ্চিমবঙ্গে কটা করোনা ছেড়ে দিতে পারলে ভাল হত।‘
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এখন কার্যত কেন্দ্রের পাঠানো করোনা পরীক্ষার কোনও কিটই নেই। কারণ ব়্যাপিড টেস্ট কেন্দ্র বন্ধ রাখতে বলেছে। এছড়া আরেক ধরনের কিট ত্রুটিপূর্ণ বলে ফিরিয়ে নিগে গিয়েছে। আর অ্যান্টিবডি কিট আজ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন এর দায় কার?
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘ভাগ্যিস আমাদের হেলথ ডিপার্টমেন্ট কিছু নিজে অর্ডার দিয়েছিল। এখন কিছুটা রয়েছে সেটা দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। সময়মতো টেস্ট না করলে পেশেন্ট মারা যেতে পারে। কার দোষ এটা?’
তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের টুইট মিলছে না। সেই টুইটে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছিল, করোনা পরীক্ষার নতুন যে কিট এসেছে তা ত্রুটিপূর্ণ। আগে পুনের NIV-যে কিট পাঠিয়েছিল তা নির্ভুল ছিল। প্রশ্ন উঠছে, ভাল কিট যখন হাতে ছিল তখন পরীক্ষা হয়েছে ধীর গতিতে। আর কিট খারাপ বেরনোর পর বেড়েছে পরীক্ষার গতি।