তন্ময় চট্টোপাধ্যায়
করোনা ও আমফান পরিস্থিতির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে লাগাতার ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে সিপিএম ও তার শাখা সংগঠনগুলি। গ্রাম গ্রামান্তরে রেশন পৌঁছে দিয়েছেন সিপিএমের যুব ও ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। বিভিন্ন জায়গায় গরিব মানুষের জন্য আয়োজন হয়েছে কমিউনিটি কিচেনের। সঙ্গে ত্রাণ সামগ্রীও বিলি করেছে তারা। তবে এই উদ্যোগে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাতচনে বামেদের কোনও লাভ হবে না বলে দাবি বিজেপি ও তৃণমূলের।
সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা মানুষের সঙ্গে রয়েছি। এর সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। সাধারণ মানুষের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আমরা গরিব মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। ১৯৪৩ সালের মন্বন্তরের সময়ও মার্কসবাদীরা এই ভূমিকা নিয়েছিল। তৃণমূল ও বিজেপি কেন্দ্রের সাহায্যে ত্রাণ বিলি করছে। তাতেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।’
তিনি বলেন, ‘দল ভাঙানো তৃণমূল ও বিজেপির অভ্যাস। কেউ উত্তেজনায় সেই স্রোতে গা ভাসাতে পারেন। তবে অধিকাংশ মানুষই নিজেদের মতাদর্শে অনড় থাকবেন।’
সিপিএমের এই উদ্যোগকে যদিও বেশি গুরুত্ব দিতে রাজি নয় বিজেপি।। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘দক্ষিণবঙ্গে আমফানে যে ১২টি ব্লক সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সেখানে আমরা সিপিএমের থেকে বেশি কাজ করেছি। তাই এর কোনও ফল সিপিএম ভোটে পাবে না। দেওয়াল লিখন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’ সায়ন্তনবাবুর দাবি, ‘ভাল করে খোঁজ নিন, সিপিএম নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া রয়েছে।’
ওদিকে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, ‘তৃণমূল মাঠে ময়দানে মানুষের পাশে রয়েছে। বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’ অধ্যাপক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বামপন্থীদের ভোট ৭ শতাংশের নীচে নেমে গিয়েছে। এর থেকে খারাপ আর কী হতে পারে? ২০১৯-এ বামপন্থীদের একাংশ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। ২০২১-এ তারা ফের বামেদের ভোট দিলেও দিতে পারেন।’
বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসায় ত্রাণেও রাজনীতির হিসাব কষছেন নেতা-মন্ত্রীরা। এরই মধ্যে বিজেপির দিকে চলে যাওয়া বামেদের ভোটব্যাঙ্ক যেমন তৃণমূলের মাথাব্যথা, তেমনই সেই ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে।