২০২২ সালে বাংলায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব মিলেছিল ৩.১৪ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে আরও বেশি প্রস্তাব আসবে বলে আশা করছে রাজ্য সরকার। আগামী ২১–২২ নভেম্বর কলকাতায় হবে ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট।’ তার প্রস্তুতিতে বৈঠক হয়ে গেল নয়াদিল্লিতে। সেখানে থাকা ৪০ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা অধুনা মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা অমিত মিত্র। ওখানে তাঁদের বোঝালেন— রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা কতটা, বাংলায় বিনিয়োগ করলে শিল্পপতিরা কেমন সুবিধা পাবেন–সহ নানা বিষয়। আর সাংবাদিক বৈঠকে অমিত মিত্র আশা প্রকাশ করে জানান, গতবারের বাণিজ্য যে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছিল সেটা এবার ছাপিয়ে যাবে।
এদিন তিনি বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১০টি দেশ, পূর্ব ইউরোপের ৮টি দেশ, আশিয়ান দেশগুলি, সৌদি আরব, কোরিয়া, জাপান, কেনিয়া, কলম্বিয়া এবং পোল্যান্ডের কূটনীতিকরা। তাজ প্যালেস হোটেলের ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে বিদেশ মন্ত্রকের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (স্টেটস) সি রাজাশেখর উপস্থিত ছিলেন। তিনিও বাংলায় বিনিয়োগের পক্ষে সওয়াল করেন। অমিত জানান, এবারের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কয়েকটি সেক্টরকে ফোকাল থিম হিসেবে তুলে ধরা হবে। আর সেগুলিই টার্নিং পয়েন্টের ভূমিকা নেবে।
এদিকে তিনি বিদেশি কূটনীতিকদের জানান, সামনেই বাংলায় দুর্গাপুজো। তখন বাংলায় যান এবং উপলদ্ধি করুন বাংলার সংস্কৃতি ও শিল্পকে। এখানে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে মাইনিং সেক্টরকে। কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন, কোল বেড মিথেন বা সিবিএম এবং সেল গ্যাস থাকছে। কলকাতা শহর এবং জেলায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে রান্নার গ্যাস সরবরাহের বিষয়টিকে বাণিজ্য সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বাংলার সাফল্যের বিবরণও তুলে ধরা হবে। অমিত মিত্রের দাবি, গত আর্থিক বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ২ লক্ষ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ দিয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। কলকাতায় সিলিকন ভ্যালি, লেদার, সিমেন্ট হাব এবং হিউম্যান হেয়ার শিল্পের (পরচুলা) সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী রাজ্য সরকার। এভাবে ৩৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘সমাজের একটা অংশ ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার দিকে ঝুঁকছে’, বিধানসভায় স্বীকার ব্রাত্যের
আর কী জানা যাচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর উঠে গিয়েছে কর্মনাশা বনধ। জমি অধিগ্রহণ আজ কোনও সমস্যাই নয় বলে তুলে ধরেন অমিত মিত্র। তিনি জানান, এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই বাণিজ্য সম্মেলনকে সামনে রেখে নয়াদিল্লি, চেন্নাই, চণ্ডীগড় এবং মুম্বইয়ে রোড–শো করার আয়োজন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে অমিত মিত্রের কথা মুগ্ধ হয়ে শুনলেন ইতালি, ডেনমার্ক, নরওয়ে, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, জাপান, কলোম্বিয়া, কেনিয়া, সৌদি আরব, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কূটনীতিকরা। অমিত মিত্র বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ এখন ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে এগিয়ে চলেছে। বাংলায় ক্রমশ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা পাকা হচ্ছে। এগোচ্ছে বিনিয়োগও।’