বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকে চলছে সচিত্র পরিচয়পত্র এবং ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজ। রাজ্যের নানা প্রান্তে এই কাজ চলছে। তার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে তারিখ এবং স্থান। সেখানে গিয়ে মানুষজন তাঁদের ভোটার তালিকায় নাম তোলা থেকে শুরু করে এপিক কার্ড সংশোধনের কাজ করছেন। কিন্তু এই কাজের দায়িত্বে থাকা অফিসারদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী তাঁদেরকে সরিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’–এর শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে এই সব অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। যার জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকেছেন। আর এক্স হ্যান্ডেলে তা তুলে ধরেছেন।
এদিকে সরাসরি রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে নালিশ ঠোকায় রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এদিন শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের কাছে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকেছেন। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ এখন চলছে। কিন্তু ভোটার তালিকা সংশোধনের দায়িত্বে থাকা ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের অফিসারদের সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাঁদেরকে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে কাজে লাগানো হচ্ছে। আর এটা ইচ্ছা করেই করা হচ্ছে। ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত অফিসার কর্মীদের দুয়ারে সরকারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
ঠিক কী লিখেছেন শুভেন্দু? রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে করা নালিশ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরেছেন শুভেন্দু অধিকারী নিজেই। সেখানেই তিনি গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন। এক্স হ্যান্ডেলে নন্দীগ্রামের বিধায়ক লিখেছেন, ‘রাজ্যের মুখ্যসচিবের নামে আমি দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে অভিযোগ জানিয়েছি। কারণ এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। অথচ সেখানে মুখ্যসচিব দুয়ারে সরকারের দিন ঘোষণা করেছেন। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কাজ হবে। এটা একটা অশুভ প্রচেষ্টা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যাতে ভোটার তালিকার কাজে ব্যাঘাত ঘটে।’
আরও পড়ুন: ‘বাংলা থেকে প্রাপ্ত অপরিশোধিত তেল আন্তর্জাতিক মানের’, রাজ্যসভায় দাবি মন্ত্রীর
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ার কাজের শেষ পর্ব এটাই। অথচ সেখান থেকে সরকারি অফিসারদের সরিয়ে দুয়ারে সরকারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। লোকসভা নির্বাচনের আগে যত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায় সেটা মাথায় রেখেই শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবির। সেখানে শুরুর আগেই এমন অভিযোগ এবং নালিশ নিয়ে হতবাক নবান্ন। আসলে দুয়ারে সরকার শিবির ভেস্তে দিতেই এমন ছক বলে মনে করছেন অনেকে। মানুষ যত বেশি সুবিধা পাবেন তত সরকারের দিকে ঝুঁকবেন। সেটা ঠেকাতেই এমন নালিশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা নেওয়া হবে। ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দেওয়া হবে পরিষেবা।