বন্ধ ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে রহস্যজনকভাবে যুগলের দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল সল্টলেকে। ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই, ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের নয়াপট্টিতে। সেখানকার এক অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে ওই যুবক-যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিধাননগর থানা পুলিশ। দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের নাম দেবাশিস মুখোপাধ্যায় এবং শুভাদীপ্তা গুহ বিশ্বাস। মৃতদের দু’জনেরই বাড়ি কোচবিহারে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাইয়ের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন দু’জনে। ওই আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কর্মসূত্রে চেন্নাই থেকে কলকাতার ওই আবাসনে আসেন তাঁরা। সেখানে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন দু’জনে। চলতি মাসেই তাঁদের চেন্নাই ফেরত চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল এই ঘটনা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বিধাননগর থানার পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই আবাসনের কেয়ারটেকার পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার সন্ধ্যায় একটি প্রয়োজনীয় কাজে ওই যুবক-যুবতীদের ফ্ল্যাটে যান তিনি। তবে বহুবার ডাকাডাকি করলেও তাঁদের কারও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে কেয়ারটেকার খেয়াল করেন, ঘরের মধ্যে এসি চলার আওয়াজ হচ্ছে। তখনই তিনি আশেপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের বিষয়টি জানান।তাঁরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ডাকাডাকি করলেও ফ্ল্যাটের ভেতর দিয়ে কোনও উত্তর না-আসায়, পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখা যায়, মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই যুবতী। অন্যদিকে, ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় পুলিশ। তদন্তে নেমে ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘আর্থিক সমস্যার কারণেই তারা আত্নঘাতী হয়েছেন।’ তবে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রথমে ওই যুবতীকে খুন করা হয়। তারপরে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ একটি দল। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। এই ঘটনার পিছনে অন্য কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়াও আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।