আজ এসএসসি নিয়োগ মামলার রায় দিতে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রাপকের নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলের নিয়োগ বাতিল করেছে উচ্চ আদালত। তবে তার মধ্যে একজনের নিয়োগ বহাল রাখল আদালত। জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র সোমা দাস নামক এক চাকরিপ্রাপকের চাকরি বাতিল হবে না। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বeর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মানবিক কারণেই সোমা দাসের চাকরি বহাল থাকবে। উল্লেখ্য, ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাস প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি পেয়েছিলেন। ২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের এসএলএসটি পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে আদালতের সুপারিশে শিক্ষকতার চাকরি পান সোমা। ২০১৬ প্যানেলে শুধুমত্র তাঁরই চাকরি বহাল থাকল।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সবির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই মামলায় রায়দান করে বলে, ২০১৬ সালে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দ্বাদশে নিয়োগ পাওয়া এসএসসি চাকরিপ্রাপকদের সবার চাকরি বাতিল হবে। পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বৈধ হতে পারে না। অন্যদিকে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাপ্ত বেতনের ওপর ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে চাকরিহারাদের। এর জন্যে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। এই টাকা জেলাশাসকের কাছে জমা করতে হবে তাঁদের। পরে জেলাশাসক পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা হাই কোর্টে জমা দেবেন।
অপরদিকে এসএসসি-কে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুরও নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ওমএমআর শিট পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলল আদালত। এর পাশাপাশি এসএসসির সার্ভারে দ্রুত ওএমআর শিট আপলোড করতে বলেছে হাই কোর্ট। এদিকে হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত জারি রাখবে সিবিআই। নির্দেশে বলা হয়েছে, 'যাকে প্রয়োজন, তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই'।
অবশ্য এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। তাঁর বক্তব্য, পাঁচ হাজার অভিযুক্তর জন্য ২৬ হাজারের চাকরি কেন যাবে? চাকরিপ্রাপকদের হয়ে মামলা লড়া আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় নিয়ে বলেন, 'এই রায় পুরোপুরি ত্রুটিপূর্ণ। এই মামলায় আসল বিষয়টি বুঝতে পারেনি হাই কোর্ট। আমি আশা করে, পাঁচ মিনিটে এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেবে সপ্রিম কোর্ট।' সিবিআই যে প্রক্রিয়ায় এসএসসি মামলার তদন্ত করেছে, তার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।