পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। সেই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছিল ব্যক্তির পরিবার। কিন্তু, পাল্টা ওই ব্যক্তির স্ত্রীকে অন্য একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত করেছিল পুলিশ। সেই সংক্রান্ত মামলায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ অফিসার এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনাটি নদীয়ার মরুটিয়া থানার।
আরও পড়ুন: জেল হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, পাঁচলায় পুলিশের গাড়ি ভাঙল জনতা
জানা গিয়েছে, ১০ বছর আগের একটি মাদক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল মরুটিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা মোহন মণ্ডলের বিরুদ্ধে। পরে সেই মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়ে যান মোহন মণ্ডল। কিন্তু, গত অগস্টে ফের ওই মামলায় মোহনকে গ্রেফতার করতে আসে মরুটিয়া থানার পুলিশ। তখন মোহন এবং তার স্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি আগেই এই মামলায় জামিন পেয়েছেন। তা সত্ত্বেও পুলিশ তার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। তবে সেই টাকা দিতে অস্বীকার করেন মোহন। এরপর গত ২৬ অগস্ট মোহনের ভাই শওকত মণ্ডলকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। পরের দিনই একটি বাঁশ বাগান থেকে শওকতের দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মারধর করে খুনের অভিযোগ তুলেছিল পরিবার।
অন্যদিকে, এরপরই পুলিশ মোহনের স্ত্রী মাফুজা বিবিকে একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার করে সেই সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও খুনের মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে। সেই ঘটনায় পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শওকতের স্ত্রী মঞ্জুরা বিবি। এই সংক্রান্ত মামলা এর আগে উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে। সেই সময় বিচারপতি সেনগুপ্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ মুরুটিয়া থানার এই ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে মামলার নথি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তারপরে ২ মাসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ হাইকোর্টের।