আইআইটি খড়গপুরের ছাত্র ফয়জান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে মিলেছিল খুনের ইঙ্গিত। এবার এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করার নির্দল দিল আদালত। পুলিশ আধিকারিক কে জয়রামণের নেতৃত্বে এই তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছে আদালত। তদন্ত কমিটিতে এছাড়াও থাকছেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড দফতরের অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক এবং সিআইডির অফিসার।
হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ,প্রয়োজনে এই কমিটি নার্কো টেস্টও করাতে পারবে। প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই ফয়জানকে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি করে আসছে তাঁর পরিবার। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে রিপোর্ট পাওয়ার পরে তাঁকে খুন করা হয়েছিল বলে ইঙ্গিত পেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরে আদালতের এই নির্দেশে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তি পেলেন ফয়জানের বাবা-মা। তাদের অভিযোগ, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী অফিসার তথ্য বিকৃতি করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান ছাত্রের বাবা মা। যদিও বিচারপতি রাজশেখর মান্থা জানিয়ে দেন, আদালত এখন এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। তদন্তকারী কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার পর তা বিবেচনা করবে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিকে, তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৪ জুলাই আধা এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অসমের কবর থেকে ফয়জানের দেহ তুলে কেনে এসএসকেএম হাসপাতালে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়। তবে ময়নাতদন্ত হয়ে যাওয়ার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও দেহ পরিবারেরকে তুলে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সরকারি আইনজীবী জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হোক। তবে আদালতের বক্তব্য, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। সেই মতোই তদন্ত এগিয়ে চলুক। অবিলম্বে অসমে পরিবারের হাতে ছাত্রের মৃতদেহ তুলে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর আইআইটি খড়্গপুরের লালা লাজপত রায় হলের একটি ঘর থেকে ফয়জান আহমেদের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তারপরেই অসমের তিনসুকিয়া থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে এসে ছেলেকে খুনের অভিযোগ করেছিলেন ফয়জানের বাবা মা। প্রথমে মৃতদেহটি ফয়জানের বলে অস্বীকার করে তাঁর পরিবার। পরে তাঁরা দেহটি শনাক্ত করেন।ফয়জানের মৃত্যুর ঘটনায় খড়গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি এফআইআর রুজু করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফয়জান আইআইটি কর্তৃপক্ষকে একটি ইমেইল করেন। তাতে ৪ ছাত্রের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলা হয়। এমনকী ওয়ার্ডেন এবং সহকারী ওয়ার্ডেন এনিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেননি বলেও অভিযোগ তোলা হয়। তার ভিত্তিতে ৪ জন আদালতে গিয়ে সম্প্রতি আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে অবশ্য তাঁদের জামিন দিয়েছে আদালত।