আজ যে মহার্ঘভাতার জন্য রাজ্যজুড়ে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মচারী সংগঠন তাঁদের প্রথম পথ দেখিয়েছিল স্যাট। কিন্তু ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও চেয়ারম্যান ছাড়াই চলছে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল বা স্যাট। তার জেরে একাধিক মামলার শুনানি থমকে গিয়েছে। এই স্যাটই বলেছিল ডিএ বা মহার্ঘভাতা কর্মচারীদের অধিকার। তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে জবাব তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিকে ২০২২ সালের জুলাই মাসে স্যাটের চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর নেন বিচারপতি সৌমিত্র পাল। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত স্যাটে কোনও নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হয়নি। ফলে মামলার পাহাড় জমছে। এই নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তার মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের রিপোর্ট তলব বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। কলকাতা হাইকোর্ট সরাসরি জানতে চেয়েছে, স্যাটের চেয়ারম্যান নেই কেন? এবার এই প্রশ্নের জবাব হলফনামা দিয়ে জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
অন্যদিকে আদৌ রাজ্য সরকার প্রধান বিচারপতির কাছে স্যাটের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের জন্য কোনও নাম সুপারিশ করেছে কি না সেটা রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে আবার একবার চাপে পড়ে গেল রাজ্য সরকার বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যাবতীয় মামলার সুরাহা হয়ে থাকে স্যাটে। কিন্তু চেয়ারম্যান না থাকায় এই স্যাটে আপাতত কোনও ডিভিশন বেঞ্চ নেই। ফলে মামলা জমে রয়েছে।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? আদালত সূত্রে খবর, এই চেয়ারম্যান ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জাহাঙ্গীর আলি–সহ কয়েকজন। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী বলেন, ‘চেয়ারম্যান না থাকায় অনেক আবেদনের শুনানি হচ্ছে না দীর্ঘদিন। মামলাকারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।’ মামলাকারীদের দাবি, রাজ্য পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে শূন্যপদের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৭০২। কিন্ত অভিযোগ, সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং এনভিএফের (হোম গার্ড) জন্য আসন সংরক্ষণের নীতি না মেনেই সেই নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালে নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে স্যাটে মামলা হয়। আর নানা কারণে শুনানিতে বিলম্ব হয়। তারপরে স্যাটের চেয়ারম্যানের পদ থেকে বিচারপতি সৌমিত্র পাল অবসর নেন। তারপর থেকে শুনানি থমকে যাওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ মামলাকারীরা।